শাহরাস্তিতে এক অসহায় পরিবারের আর্তনাদ, জরাজীর্ণ ঘরটিকে ঘিরে মৃত্যুর আশংকা
শাহরাস্তিতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় লগডাউন মানতে গিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে এক অসহায় পরিবার।
শাহরাস্তিতে এক অসহায় পরিবারের আর্তনাদ, জরাজীর্ণ ঘরটিকে ঘিরে মৃত্যুর আশংকা
ইউসুফ পাটোয়ারী লিংকনঃ
শাহরাস্তিতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় লগডাউন মানতে গিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে এক অসহায় পরিবার। তাদের দেখতে কিংবা তাদের দুখের কথা শুনতে এখনও কেউ আসেনি। ৪ জনের সংসার। একজন প্রতিবন্ধী। সংসার প্রধান একজন রিক্সা চালক। রিক্সাও এখন বন্ধ। গৃহ চালিকা অন্যের কাজে সাহায্য করতেন। করোনা পরিস্থিতির কারনে তারাও আসতে নিষেধ করেছেন। তাই অনাহার-অর্ধাহারই তাদের চলমান পরিস্থিতি। ঘটনাটি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মেহার দক্ষিন ইউনিয়নের নায়নগর গ্রামের হাজী বাড়িতে ঘটে। জানা যায়, ওই বাড়ির মৃত মৃত শাহজাহানের একমাত্র পুত্র মোঃ ইমাম হোসেন দিনমজুরী করে কোন মতে তাদের ৪ জনের সংসার জীবনে দিনাতিপাত করেন। একমাত্র ছেলে মোঃ তাজুল ইসলাম (১৩) সুয়াপাড়া জিকে উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে আর মেয়ে ফারজানা আক্তার (৭) প্রতিবন্ধী। একটি বসত ঘর তাদের জীবন বদলে দিতে পারে। একমাত্র ঝরাজ্বীর্ণ বসত ঘরটি প্রতিনিয়ত তাদের স্বপ্ন ভঙ্গের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই পরিবারটি। গৃহবধূ শিল্পী বলেন, আমার স্বামী দিনমজুর। অস্বচ্ছল পরিবারে দুটি সন্তান নিয়ে অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছি। দুই সন্তানের মধ্যে একমাত্র কন্যাটিও প্রতিবন্ধী। স্বামীর স্বল্প উপার্জনে আহারের ব্যবস্থাতেই টানাটানি। জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করা অতি কষ্টকর। বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির পানি ঘরে ঝরঝর করে প্রবেশ করে। একমাত্র বসতের জন্য দো-চালা ঘরটি পশ্চিম-উত্তর দিকে হেলে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছি। যে কোনো সময় ওই ঘর চাপা পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। খোলা আকাশের নিচে যুগিয়ে আনা চাল-ডাল রান্না করতে হয়। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী হাবাগোবা প্রকৃতির মানুষ। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারনে বেকারত্ব সময় কাটালেও এখন পর্যন্ত সরকারী কোনো দান-অনুদান আমাদের দেওয়া হয়নি। অতি কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছি। আমাদের কথা শোনার কেউ নেই, দেখার মতও কেউ নেই। তাই চাঁদপুর-৫ আসনের সংসদসদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম মহোদয়ের একান্ত নজরদারিতা কামনা করেন তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন বলেন, এই পরিবারটি আমার নির্বাচনী এলাকার। তারা অত্যন্ত গরীব। তাদের একমাত্র মেয়েটি প্রতিবন্ধী। যাকে আমি প্রতিবন্ধীর কার্ড করে দিয়েছি। তাদের একটি বসত ঘরের খুব প্রয়োজন। একটি সরকারী ঘর পাওয়া তাদের নাগরিক ন্যায্য অধিকার। সঠিক মাত্রায় ও সঠিক নিয়মে তারা এই ঘরটি পাওয়ার অধিকার রাখে। তাই চাঁদপুর-৫ আসনের মাননীয় সংসদসদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম মহোদয়সহ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সুনজর কামনা করেন তিনি। স্থানীয় ইউপি সদস্য জুলহাস বলেন, শিল্পীর স্বামী পরিবার অত্যন্ত গরীব ও অসহায়। আমি তাদের সম্পর্কে জানি। একটি সরকারী ঘর হলে তাদের আবাসন দূর্দশা দূর হবে। তাই এই ঘরটি দেয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে তিনি বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানান। এবিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, এই পরিবারটি প্রকৃত ভাবেই অসহায়। তাদের পাশে দাঁড়ানো একান্ত প্রয়োজন। সরকারী ঘর কিংবা বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারী দান-অনুদান পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে তাদের। তাই তাদের এই অসহায়ত্ব দূরীকরণে স্থানীয় সংসদসদস্য ও দলীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।