মানবতার সেবায় ফয়সাল খান---
ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন ভালবাসার খাদ্য উপহার


রাত্রী তখনও গভীর হয়নি। একদল যুবক চাঁদপুর শহরের কোনো একটি অসহায় পরিবারের ঘরের দরোজায় দাঁড়িয়ে হাঁক ছুঁড়ছেন-- 'চাচা বাড়িতে আছেন'। এমন মিস্টি ডাক শুনে ঘরে থাকা রিক্সা চালক, নৌকার মাঝি, কিংবা দিনমজুর পুরুষটি দরোজা খুলে দেয়। এবার, তরুণদের মধ্য থেকে সেই মিস্টি কণ্ঠে আবার কথা আসে-- 'ঘর থেকে বেড় হতে হবে না, আপনি ঘরে থাকুন। এই নিন, আপনার জন্যে কিছু বাজার নিয়ে এসেছি। আশাকরি অনেকদিন চলে যাবে।
দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের কথা নিশ্চই শুনেছেন? খুবই ভয়ঙ্কর অসুখ। একবার আক্রান্ত হলে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে আপনার ঘরে থাকা বেশী জরুরী। তাই ঘর থেকে বের হবার দরকার নেই। পরিবারের সাথে ঘরে থেকে আল্লাহর ইবাদত করুন। আর আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে দোয়া চান।
এভাবেই রাতের আঁধারে চাঁদপুর শহর এবং শহরতলীতে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র এবং নিম্নমধ্যবিত্তদের ঘরের দরোজায় 'ভালোবাসার প্যাকেট রেখে খাদ্য সামগ্রী উপহার হিসেবে বিতরণ করেন ঢাকার তরুন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মোঃ ফয়সাল খান।
চাঁদপুরের বাবুরহাটের সন্তান সে। ছোট বেলায় পুরাণবাজারে বেড়ে উঠা ফয়সাল খান তার বড় ভাই ইমরান খানের অনপ্রেরনায় মানবতার এই ক্লান্তিলগ্নে তিনি তার সাধ্যমতো ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। যে ভালোবাসার প্যাকেটে ছিলো চাল, ডাল, তৈল, লবন, আলু, পেয়াজ, সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পন্য।
ফয়সাল খান কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা শিল্পপতি নন। তবে তিনি প্রতিষ্ঠিত একজন তরুণ ব্যাবসায়ী। চাঁদপুরের এই তরুণ স্বপ্নবাজ মানুষটি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আর সেই স্বপ্নপূরনে তিনি হেঁটেছেন মসৃণ কিংবা কঠিন সব পথ। তাঁর ঘাম ঝরানো পরিশ্রম, দক্ষতা আর সততার সমন্বয়ে নিজেকে নিজেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজেকে চিনতে পেরেছেন বলেই, তার কাজের পেছনে ছুটতে হয়নি বেশিদিন। বরং কাজই এখন তাঁর পেছনে ছুটছে।
ঢাকার বুকে Blue Shark Engineering Corporation নামে নিজের হাতে গড়ে তুলেন প্রতিষ্ঠান। যার চীপ অপারেটিং অফিসার তিনি। তার মেকানিক্যাল কনস্ট্রাকশন ফার্মের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করছেন শতজন। ন্যায়ের পথে চলে ব্যবসার পরিধি, সামাজিক অবস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি বড় করে চলেছেন তার মন ও মনন। দেশে করোনা ভাইরাসে পরিস্থিতি আন্দাজ করেই অনেক আগেই প্রতিষ্ঠানের সকল দায়িত্বরতদের ছুটি দিয়েছেন। যাতে তারা পরিবার পরিজনের সাথে ভালো থাকতে পারেন।
আর নিজে গ্রামের বাড়িতে এসে দেশের এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানুষ ও মানবতার সেবার এগিয়ে এসেছেন। নিজের উপার্জিত টাকায় অসহায় দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন বন্ধুদের সাথে নিয়ে। হোক না সেটি নেহাৎ ১০০ জন, ২০০ জন কিংবা তার কমবেশি। কিন্তু তিনি এই দুঃ সময়ে নিজের অবস্থান থেকে ভালোবাসা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেটিই তো বড় কথা।