• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট খোলা চিঠি

প্রকাশ:  ০৯ এপ্রিল ২০২০, ১৬:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

সারা পৃথিবী আজ করোনা নামক মহামারীতে আক্রান্ত। ইতিমধ্যে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কিছু লোক মারা গেছেন। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ১৬ কোটি মানুষের আস্থাভাজন ও বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ২৬ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করেছেন। সেইসাথে জরুরি সকল সেবাসমূহ চালু রেখেছেন। সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠান করোনা প্রতিরোধে তাদের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সারাদেশের মানুষ যখন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে সারা বাংলাদেশের ৩২৮টি পৌরসভার ৩২৫০০ জন পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী শত ভয় ভীতি উপেক্ষা করে এবং ছেলে-মেয়েদের মায়া মমতা ত্যাগ করে মৃত্যুর ভয় আছে জেনেও করোনা প্রতিরোধে পৌর এলাকায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো, জনসচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরন, বিরতিহীন পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরন, রাস্তার বাতি প্রজ্জলন, মশার ঔষধ ছিটানো ইত্যাদি কার্যক্রমসহ বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনকে চাহিদা মোতাবেক সার্বক্ষণিক সকল ধরনের তথ্য প্রদানে সহযোগিতা করে আসছে। ইতিমধ্যে শ্রমজীবি ও দুঃস্থ জনগণের জন্য সরকার ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করছে। নিন্মবিত্তদের ০৬ মাসের খাবারের ঘোষণা করেছেন। সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দিষ্ট সময়ে বেতন-ভাতা প্রদান নিশ্চিত করেছেন। অথচ সারাদেশের ৩২৮টি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীর ২-৫৮ মাস বেতন বাকি। মাসের পর মাস বেতন পায় না। অবসরে পেনশন পায় না! এদের জন্য কি করেছেন.....! সবাই যখন আজ করোনা আতঙ্কে গৃহবন্দি তখন পৌর কর আদায় বন্ধ, পানির বিল আদায় বন্ধ, সকল ধরনের রাজস্ব আদায় বন্ধ। তাহলে তো পৌর কর্মীর বেতনও বন্ধ। বৈশাখী ভাতাও বন্ধ। সামনে রমজান তারপর রমজানের ঈদ। এবারের রমজানের ঈদে তো আমরা বেতন-বোনাস পাবো না। তাহলে ১৬ কোটি মানুষের দেশে ৩২৫০০ জন পৌরসেবক ও তাদের পরিবারবর্গ বৈষম্যের শিকার নয় কি ? পরবর্তীতে ডেঙ্গু নিধন, কোরবানীর বর্জ্য অপসারন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি কার্যক্রম পৌরসেবকগণ মেয়র মহোদয়গণের নির্দেশনায় রাতদিন পরিশ্রম করে পেটে পাথর দিয়ে সম্পন্ন করেন। এ কেমন মানবতা ? ২০১৯ সালে দীর্ঘ ২৩ দিন যাবত জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থান করে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বকেয়াসহ বেতন-ভাতা রাজস্ব খাত থেকে প্রদানের জন্য শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের সকল দাবি-দাওয়া পুরনের আশ্বাসে ৩২৮ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ স্ব স্ব কর্মস্থলে ফিরে আসে এবং কাজে যোগদান করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রায় ১ বছর হয়ে গেলো পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাগ্যের চাকা এখনো ঘুরছে না। আমদের সন্তানদের দু মুঠো ডাল ভাত, পড়ালেখার নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারছি না। এটা লজ্জা নয়, পৌরসেবকের ভাগ্যে এটা করোনার মতোই একটা মহামারী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিব শতবর্ষে আপনার অনুগত পৌরকর্মকর্তা কর্মচারীদের ২-৫৮ মাস বকেয়া বেতন প্রদান নিশ্চিত করুন। প্রতি মাসে রাজস্ব খাত থেকে বেতন প্রদান নিশ্চিত করুন। অবসরপ্রাপ্তদের ভবিষ্যত ও আনুতোষিক তহবিলের ভাতা প্রদান নিশ্চিত করুন। আপনি পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি মানবিক হোন। পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশের সকল সঙ্কটময় মুহূর্তে সরকারের সকল নির্দেশ মোতাবেক কাজ করতে প্রস্তুত আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

মোঃ আবুল কালাম ভূঞা সভাপতি বাংলাদেশ পৌর সার্ভিস এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগ, চট্টগ্রাম।