• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হত্যা মামলায় হাজীগঞ্জের একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রকাশ:  ০২ মার্চ ২০২০, ১৩:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

হাজীগঞ্জের পশ্চিম কাজীরগাঁও গ্রামের মিয়াজী বাড়িতে পুকুর ঘাটে গরুর বাছুর বেঁধে রাখাকে কেন্দ্র করে নাসির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অপরাধে প্রধান আসামী মোঃ জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, আসামী মোঃ রিপনকে ৩২৬ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। ৩২৩ ধারার অপরাধে এক বছরের সশ্রম কারাদ-, ৩২৪ ধারায় অপরাধে দুই বছরের সশ্রম কারাদ- এবং অপর আসামী ফারহানা ওরফে ফেন্সীকে ৩২৩ ধারার অপরাধে ৬ মাসের সশ্রম কারাদ- প্রদান করেছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আসামী মোঃ রিপনের সকল দ-সমূহের সাজা একত্রে চলবে।

রোববার (১ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মোঃ জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন। নিহত নাসির উদ্দিন মিয়াজী বাড়ির আব্দুল মতিন মিয়াজীর ছেলে। বাদী ও বিবাদীরা একই বাড়ির বাসিন্দা। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মোঃ জুয়েল, পৃথক সাজাপ্রাপ্ত রিপন ও ফারহানা মিয়াজী বাড়ির আব্দুর রহিমের ছেলে এবং মেয়ে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মামলার বাদী মোঃ গিয়াস উদ্দিন ও তার আপন ভাই নিহত নাসির উদ্দিন রমজানের ইফতারের পরে বাড়ির পুকুরে নামাজের জন্যে অজু করতে যান। ওই সময় বাড়ির ইজমালী রাস্তায় পুকুরের পাড়ে বিবাদী রিপনদের একটি গরুর বাছুর দেখতে পায়। তখন নাসির ওই বাছুরটির রশি খুলে ছেড়ে দেয় এবং অন্যত্র নিয়ে যেতে বলে। তখন তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রিপন তাদের ঘরে থাকা শাবল দিয়ে নাসিরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এই অবস্থায় নাসির চিৎকার করলে রিপনের সাথে অপর আসামী জুয়েল ও ফেন্সী ঘরে থাকা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নাসিরকে বেদম পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাকে উদ্ধার করার জন্য তার স্বজনরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করে। গুরুতর অবস্থায় নাসিরকে উদ্ধার করে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ পরবর্তীতে কুমিল্লা মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে কুমিল্লা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় নাসির উদ্দিনের মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় নাসির উদ্দিনের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন ঘটনার দিন বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সময়ের হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদেকুর রহমান ব্যাপক তদন্ত শেষে একই বছরের ২৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী বলেন, মামলাটি প্রায় ১৩ বছর আদালতে চলমান অবস্থায় ১৫জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক এই রায় দেন। রায়ের সময়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা পলাতক ছিলেন। সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহমেদ। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন রাজেশ মুখার্জী ও মোঃ ফারুক।