• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

সততা ও পরিশ্রমের বলে দিনমজুর শাহীন এখন স্বাবলম্বী

প্রকাশ:  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 নিজের জমি নেই, তাই অন্যের জমিতে নার্সারী দিয়ে দিনমজুর শাহীন আলম এখন লাখপতি। সততা ও পরিশ্রমের বলে ঘরে সাফল্য আসে। আর এ কারণেই দিনমজুর থেকে লাখপতি হয়েছেন ফরিদগঞ্জের পূর্ব বড়ালী গ্রামের অল্প শিক্ষিত শাহীন আলম (৩২)।
নিজের আয়ের টাকায় বোন বিয়ে দিয়েছেন। বসত ঘর বানিয়েছেন। দুই সন্তান নিয়ে বর্তমানে স্বাবলম্বী শাহীন সুখে শান্তিতে আছেন। অন্যের জমিতে একটি নার্সারী দিয়ে তার বন্দোবস্ত (লীজ) নেয়া ২ একর ২৮ শতাংশ জুড়ে মোট ১০টি নার্সারীর মালিক তিনি।
প্রায় ১৩ বছর আগে নিজের একটি গাভী বিক্রির মাত্র ৩০ হাজার টাকার পুজি খাঁটিয়ে শুরু করেন নার্সারী। এ নার্সারী থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা বিক্রি করে শাহীন এখন লাখপতি। আর এ জন্যে শাহীন বারবার মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে শাহীনের নার্সারীতে গিয়ে দেখা যায়, সে তার নার্সারীতে থাকা বিভিন্ন গাছে পাম্প মেশিনের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাথে রয়েছে তার নিয়োগকৃত ক’জন দিনমজুর। তারাও কাজ করছে নার্সারীতে। এ সময় কথা হয় শাহীনের সাথে। জানালেন দিনমজুর থেকে তার স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব বড়ালী গ্রামের আবদুল হক খন্দকারের ছেলে শাহীন আলম। তার ১০টি নার্সারীতে পুঁজি রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকার গাছ। প্রতিদিনই ১০/১৫ হাজার টাকার চারা বিক্রি করছেন। তার নার্সারীতে দিন মজুর হিসেবে কাজ করছে ১৫/২০ জন। এক পরিসংখানে দেখা যায়, শাহীন বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে মোট ২ একর ২৮ শতাংশ জমি ইজারা নিয়ে করেছেন নার্সারী। প্রায় ৫০টি প্রজাতির বিভিন্ন গাছের চারা রয়েছে তার নার্সারীতে। ১০টি নার্সারীতে প্রতিদিনই ১০/১৫ জন লোকের কাজের মজুরি দিতে হয় ৮/১০ হাজার টাকা। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ইজারা নেয়া জায়গা বাবদ বছরে দিতে হচ্ছে ৯০ হাজার টাকা। সব আয়-ব্যয়ের হিসেব দিয়ে শাহীন আলম বলেন, বলা যায় আমি এখন শুধু লাখপতিই নই আমি এক স্বাবলম্বী যুবক। নার্সারির নাম দিয়েছে শাহীন নার্সারী। এসব নার্সারী থেকে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকায় চারা বিক্রি হচ্ছে। চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হাটের দিন শাহীন নার্সারী থেকে বিভিন্ন  প্রজাতির গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেকে আবার পছন্দের গাছের চারা কিনতে সরাসরি তার নার্সারীতে আসছেন।
এক আলাপে শাহীন একটি দাবি করে জানান, নার্সারী করতে হলে প্রথমত বেশি প্রয়োজন হয় মাটি। প্রতি বছরের পৌষ ও মাঘ মাসেই নার্সারীতে মাটি আনতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ট্রাক্টর চলাচল নিষেধ থাকায় মাটি সংগ্রহে বিপাকে পড়তে হচ্ছে নার্সারীর মালিকদেরকে। চারা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে অন্তত বছরের পৌষ ও মাঘ মাসে ট্রাক্টরে শুধুমাত্র নার্সারীর মাটি পরিবহনের জোর দাবি জানালেন তিনি।
ফরিদগঞ্জের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম ভুট্টো বলেন, পৌর এলাকার শাহীন হোসেনের ১০টি নার্সারীতে প্রায় ৫০ প্রজাতির গাছের চারা রয়েছে। এই নার্সারী দিয়ে পরিশ্রমের বলে এক সময়ের দিনমজুর এখন লাখপতি। প্রতি বছর সরকারিভাবে আয়োজন করা বৃক্ষমেলায় শাহীন অংশ নেয়ায় জমে উঠে আমাদের বৃক্ষ মেলা।