চাঁদপুরে শীতবস্ত্র থেকে বঞ্চিত অসহায় প্রায় দুই হাজার হরিজন


চাঁদপুর শহরে চলতি বছর একটু সু-দৃষ্টির অভাবেই যেন প্রায় ২ হাজার হরিজন সম্প্রদায়ের অসহায় মানুষ শীতবস্ত্র পাওয়া থেকে বঞ্চিত। ২০ জানুয়ারি সোমবার পর্যন্ত সরকারি- বেসরকারী কাউকেই হরিজন সম্প্রদায়ের শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। অথচ, এই মানুষগুলোই সারাবছর নামমাত্র খরচে সমাজের বিভিন্ন স্তরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে জীবন নির্বাহ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরে ৩টি হরিজন কলোনীতে প্রায় ২ হাজার হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করছে। এদের মধ্যে পুরাণবাজার হরিজন কলোনীতে প্রায় ৭'শ হরিজন, রেলওয়ে হরিজন কলোনীতে প্রায় ৭'শ এবং স্বর্ণখোলা হরিজন কলোনীতে আরো প্রায় ৬'শ হরিজন সম্প্রদায়ের লোক স্থায়ীভাবে বাস করছে। যার মধ্যে হেলা প্রায় ১ হাজার ৮'শ, বাঁশফোর প্রায় ১'শ এবং ডোম প্রায় ১'শ জন রয়েছে।
খবর নিয়ে আরো জানা যায়, ডোমর, বাল্মিকী, রাউথ, লালবেগী, হারী গোত্রের হরিজন চাঁদপুরে না থাকলেও হেলা,বাঁশফোড় ও ডোম গোত্রের হরিজনরা এখনো শহরে নানা অবহেলায় আশ্রিত। যারা জেলার বিভিন্ন অফিস আদালত, বাসাবাড়িতে পরিছন্ন কর্মী, মুচিগিরী সহ নানান পেশায় জড়িত। আর এই পেশায় থেকে সামান্য আয় দিয়ে কোনমতে টেনেটুনে এরা নিজেদের সংসার চালাচ্ছে। যারমধ্যে স্বর্ণখোলায় ৬৫ ঘর, রেলওয়ে কলোনীতে ৫০টি কোয়ার্টার এবং পুরানবাজার হরিজন কলোনীতে আরো প্রায় ৩০টি ঘর রয়েছে। যারমধ্যে ঘর/কোয়ার্টার প্রতি ৮-১০ জন করে হরিজনরা কোনমতে মাথাগুজে দিনাতিপাত করছে। সময়ের সাথে সাথে হরিজন বাড়ায় অনেকে আবার নিজেদের সামান্য আয় দিয়ে ছোটখাটো টিনের ঘর বানিয়েও বসবাস করছে। যাদের মধ্যে প্রায় কয়েক'শ বয়স্ক বৃদ্ধ/বৃদ্ধা সহ অসহায় হরিজনরা তীব্র শীতে শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু এবছর বিভিন্নভাবে জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন সংস্থাকে নানা স্থানে অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়। কিন্তু একটু সুদৃষ্টির অভাবেই যেন সচেতনমহলের এই শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম থেকে এখন পর্যন্ত বঞ্চিত হরিজনরা।
এ ব্যপারে চাঁদপুর হরিজন সমাজ উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আকাশ দাসের সাথে আলাপ করে জানা যায়, অসহায় শীতার্ত হরিজনদের কেউ-ই এখন পর্যন্ত শীতবস্ত্র দিতে আসেনি। যে কারনে এই তীব্র শীতে হরিজন সম্প্রদায় খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে।যা চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাস করা যায় না। আমি অসহায় শীতার্ত হরিজনদের পাশে শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসতে আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষামন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুধীমহলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাই।
এ ব্যপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি রেভিনিউ) মোহাম্মদ আব্দুল্লা আল মাহমুদ জামানের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, হরিজনদের বিষয়টি আমাদের নজরে আনার জন্য ধন্যবাদ। দ্রুতই আমরা তাদের মাঝে কম্বল বিতরণ করার উদ্যোগ নিবো।