বিজয় দিবসে চাঁদপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক
বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রের অংশীদার


মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে সংবর্ধনা দিয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। ১৬ ডিসেম্বর সোমবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এদিন সকাল সাড়ে এগারটার সময় চাঁদপুর সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে তাদের এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও উপহার প্রদান করা হয়।
শুরুতে অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
জেলা প্রশাসনের বিজয় দিবস সংবর্ধনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মাহমুদ জামানের সভাপতিত্বে ও সদর ইউএনও কানিজ ফাতেমার পরিচালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ইতিহাসের মহানায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই আমরা সংক্ষিপ্ত সময়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি দেশ পেয়েছি। ক্যারিশমেটিক লিডার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই জাতির পিতার সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা একাকার ছিলেন। তারা জীবনবাজী রেখে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে সর্বত্র ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধের ময়দানে। তাই রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সেই বীর সেনানীদের সম্মান জানাচ্ছি। এই বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রের অংশীদার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের সকল কাজের প্রেরণা মুক্তিযোদ্ধারা। বিজয়ের এইদিনে আমরা তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানাচ্ছি এবং অন্তরের অন্তস্থল থেকে তাদের গভীরভাবে স্মরণ করছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিজয়ের পেছনে অনেক ত্যাগ ছিলো। এ বিজয় যেমন আনন্দের, তেমনি বিষাদের। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আমরা একটি পতাকা, মানচিত্র ও দেশ পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা রক্ত দিয়েছেন উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্যে। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজকে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশটাকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, আমাদের অস্তিত্ব দেশের স্বাধীনতা। যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা যাতে আর ক্ষমতায় না আসতে পারে সে লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই দেশ হবে রাজাকার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত। নতুন প্রজন্মকে নিয়ে একটাই আওয়াজ তুলতে হবে, জয় বাংলা।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুদ্ধকালীন বিএলএফ কমান্ডার হানিফ পাটওয়ারী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বরকান্দাজ, মহসিন পাঠান, মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, ব্যাংকার মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা।
চাঁদপুরের মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার শহীদ জাবেদের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা চন্দন পোদ্দারসহ চাঁদপুর জেলার সকল উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ছানাউল্লাহ খান এবং গীতা পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা সাধন সরকার।