• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

পদ্মা হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু!

প্রকাশ:  ২৭ অক্টোবর ২০১৯, ১২:১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর শহরের বিপণীবাগ পৌর মার্কেটের তিন তলায় পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৫ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নবজাতকের মা সুমি আক্তার (২২) ও পিতার নাম শাহীন বেপারী। তাদের বাড়ি হাইমচর উপজেলার আলগী গ্রামে। শাহিন ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করেন। প্রসূতি সুমি আক্তারের বাবা সোলেমান জানান, সাত বছর পূর্বে সুমির বিয়ে হয়। শুক্রবার সকালে মেয়ের প্রসব ব্যথা উঠলে প্রথমে স্থানীয় ধাত্রী ফয়জুন্নাহারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার পরামর্শে চাঁদপুর শহরের পদ্মা হাসপাতালে এনে সুমিকে ভর্তি করা হয়। তখন কর্মরত চিকিৎসক সুমির মিনি সিজার করে ডেলিভারি করেন। বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর বাচ্চার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কর্মরত ডাক্তার অক্সিজেন না লাগিয়ে বাচ্চাকে স্যালাইন দিয়ে রাখে এবং স্যালাইনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ইনজেকশন পুশ করেন।
এদিকে শ্বাসকষ্ট যখন প্রবল আকার ধারণ করে তখন প্রায় ৩ ঘণ্টা পর বাচ্চাকে অক্সিজেন দেয়া হয়। ততক্ষণে নবজাতক শিশুর শ^াসকষ্ট অনেক বেড়ে যায়। পরে বিকেল ৫টায় শিশুটি মৃত্যুবরণ করে। পরিবারের অভিযোগ সঠিক সময়ে বাচ্চাকে অক্সিজেন না দেয়ায় সে মারা গেছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের মালিক এম সফিউল্লাহ জানান, হাইমচর থেকে বাচ্চারা অর্ধেক মাথা বের হওয়া অবস্থায় সুমি আক্তারকে পদ্মা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রোগীকে মিনি সিজার করে বাচ্চাকে আমরা ভূমিষ্ঠ করাই। ততক্ষণে দীর্ঘক্ষণ বাচ্চার মাথা আটকে থাকায় তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
এদিকে সুমির বাবা জানান, দীর্ঘ ৬ বছর পর অনেক সাধনার ফসল এই বাচ্চা। নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্যে হাইমচর আলগী গ্রামের ধাত্রী ফয়জুন নাহারেরর কাছে নেই। তখন তার পরামর্শ মতে পদ্মা হাসপাতালে নিয়ে আসি। বাচ্চাটির শ্বাসকষ্টের সময় তারা অক্সিজেন দেয় নি। এদিকে নবজাতক মৃত্যুর পরে তাকে দেয়া ইনজেকশনের প্যাকেটগুলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নেয়।
খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর সাংবাদিকরা ছুটে যায় ওই হাসপাতালে। তখন কর্মরত চিকিৎসক ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপক সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘসময় মাথা আটকে থাকার কারণে শিশুটি শ^াসকষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অপরদিকে দেখা যায় তড়িগড়ি করে হাসপাতাল থেকে মৃত শিশুটির মাসহ পরিবারের লোকদের বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
এ সময় লক্ষ্য করে দেখা যায় যে, সাংবাদিকদের অগোচরে বাচ্চার মাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে নামিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়ে এক ব্যক্তি সাংবাদিকদেরকে দেখে বলেন, এটা কেমন বিচার? একজন মা কয়েক ঘন্টা পূর্বে একটি সন্তান প্রসব করলো, অথচ ডাক্তাররা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরা বাঁচতে হাসপাতাল থেকে অসুস্থ অবস্থায় মৃত বাচ্চার মাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দিলো। এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন, এটা কোনো সুস্থ চিকিৎসক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাজ হতে পারে না।