বিশ্ব ডিম দিবসে চাঁদপুরে র্যালি ও আলোচনা সভা
মেধাবী জাতি গঠনে ডিম উৎপাদন যেনো ব্যাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে : সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান


‘সুস্থ মেধাবী জাতি চাই-প্রতিদিনই ডিম খাই’ এ প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে বিশ্ব ডিম দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে র্যালি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিশেষে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার কৃষির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বাড়ি একটি খামারের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। খামারিদের উদ্বুদ্ধ করায় এ বছরের কোরবানিতে চাঁদপুরে নিজস্ব উৎপাদনে বাজারগুলো দখলে ছিলো। চাঁদপুরের প্রতিটি গরুর হাটে স্থানীয় খামারিদের দাপট ছিলো। কাজেই দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে নিরলস কাজ করছেন।
তিনি আরো বলেন, মেধাবী জাতি গঠনে ডিম উৎপাদন যেনো ব্যাহত না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা গো-খাদ্য এবং মুরগির খাদ্যে ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করতো। সেটা সরকারের আন্তরিকতার কারণে বন্ধ হয়েছে। সামনে যেনো কোনো অসাধু ব্যবসায়ী এ সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে আমরাও সজাগ থাকবো। আমি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারকে এ বিষয়ে আরো গুরুত্ব দিতে বলবো।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ বখতিয়ার উদ্দিনের সভাপ্রধানে ও হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ জুলফিকার আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ মোঃ সাইফুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ হাবিব উন নবী। আরো বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ জ্যোতির্ময় ভৌমিক, শাহরাস্তির প্রাণিসম্পদ অফিসার দুলাল চন্দ্র ঘোষ, জেলা পোল্ট্রি ফিড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ তৈয়ব তাহের সরকার টিটু।
উপস্থিত ছিলেন মোঃ মফিজুর রহমান খন্দকার, খামারী জুনায়েদ মোল্লা, প্রফুল্ল সরকার। খামারী মাওঃ এইচএম হাবিবুল্লাহ, রফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রাণীর খামারীগণ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করা হয়। যা পরবর্তীতে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকে প্রথমবারের মতো ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালন করা হয়। সেটি ছিলো ১৮তম বিশ্ব ডিম দিবস। সে থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে বিশ্ব ডিম দিবস উদ্যাপিত হয়ে আসছে।
১৯৬৪ সালে ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয়। বর্তমানে এ সংস্থার সদস্য সংখ্যা ৮০। সংস্থাটির উদ্যোগে প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত প্রভৃতি দেশসহ সারা বিশ্বের ৪০টি দেশে পালিত হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’। যার পরিধি ও ব্যাপ্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ অ্যানিমেল অ্যাগ্রিকালচার সোসাইটি (বিএএএস) ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়। সে সুবাদে দিবসটির গুরুত্ব অনুধাবন করে চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরও এটি পালন করে।