• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

অভিভাবকহীন ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট হাই স্কুল ॥ ৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষকরা

মাউশি পরিচালকের নির্দেশ উপেক্ষিত ॥ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি

প্রকাশ:  ২৬ আগস্ট ২০১৯, ১৩:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অধিকাংশ শিক্ষকের প্রাইভেট টিচিং বন্ধ হয়ে গেছে বহু আগে। স্কুল সরকারি হওয়ায় বন্ধ বেতনের সরকারি অংশও। এমন যখন পরিস্থিতি তখন বেতনের স্কুলের অংশই শেষ অবলম্বন ছিলো ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর। কিন্তু চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে অদ্যাবধি ন্যায্য বেতনাদি পাচ্ছেন না ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট মডেল হাই স্কুলের শিক্ষকগণ। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫ মাস একটি টাকা বেতন না পেয়েও বেতন ছাড়াই শিক্ষকরা কাটাতে হয়েছে ঈদ-উল ফিতর। ঈদের পূর্বে প্রধান শিক্ষক অন্তত কয়েক মাসের বেতন হলেও দিবেন এমন আশায় যারা বুক বেঁধেছিলেন তাদের আশায় গুড়ে বালি।
স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যথাযথ মাসিক বেতন সংগ্রহ করলেও শিক্ষকদের বেতন প্রদানের কোনো উদ্যোগ নেননি প্রধান শিক্ষক। বছরের শুরুতে সেশন ফি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। প্রায় ১২শ’ শিক্ষার্থীর স্কুলে সেশন ফি বাবদ উত্তোলন হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা। টাকাগুলো স্কুলের ভিন্ন একটি একাউন্টে জমা রেখে তার কিছু অংশ প্রধান শিক্ষক স্কুলের নানামুখী উন্নয়নমূলক কাজের নামে খরচ করেছেন বলে জানান শিক্ষকগণ। যদিও স্কুল সরকারিকরণ প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা আছে, প্রজ্ঞাপনের পর থেকে স্কুলে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে না। শুধুমাত্র প্রাত্যহিক দিনের সাধারণ ব্যয় চালিয়ে নিতে পারবেন প্রধান শিক্ষক। তা উপেক্ষা করে গত ৭ মাসের মধ্যেই তিনি স্কুলের দুই ভবনের বারান্দার চারদিকে লোহার খাঁচা তৈরি করেছেন। যাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার মত।
দীর্ঘ মাস শিক্ষকরা বেতন না পাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের কাছে বেতন চাইলে তিনি ফান্ডে টাকা নেই বলে জানিয়ে দিতেন। শিক্ষকরা আপাতত সেশন ফির ফান্ড থেকে বেতন দেওয়ার প্রস্তাব রাখলে প্রধান শিক্ষক বলেন, সেশন ফি'র ফান্ড হলো স্কুলের উন্নয়ন ফান্ড। এ ফান্ড থেকে তিনি বেতন দিতে পারবেন না। শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ-সংকটের অজুহাত দিলেও স্কুল ভবনের বারান্দায় অপ্রয়োজনীয় লোহার খাঁচা লাগানোর ক্ষেত্রে মোটেই অর্থ সংকটে ভোগেননি প্রধান শিক্ষক। এ যেন শিক্ষকদের সাথে প্রধান শিক্ষকের এক অদ্ভুত রসিকতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিকাংশ শিক্ষকের এবারের রমজান কেটেছে অতি দরিদ্রতায়। রমজানের ঈদে পরিবারকে দিতে পারেননি নতুন পোশাক। আর্থিক সংকটে ঈদের আনন্দ যখন ফিকে হয়ে যায় তখনই ঈদ-উল-ফিতরের পর ঐক্যবদ্ধ হতে থাকেন শিক্ষকগণ। মাসের পর মাস শ্রেণি পাঠদান করেও বেতন না পাওয়ায় প্রতিবাদী হয়ে উঠেন অধিকাংশ শিক্ষক। অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতনাদি ও পরীক্ষার ফি-সহ মোটা অংকের অর্থ সংগ্রহ করে জমা দিলেও বেতন দেওয়ার কোনো তৎপরতা দেখাননি তিনি। ফলস্বরূপ শিক্ষক কনফারেন্স হলে প্রধান শিক্ষকের সাথে একাধিকবার ঝগড়ার সৃষ্টি হয় শিক্ষকদের। শিক্ষকদের বেতন প্রদান ও কোচিং ক্লাসের টাকা যথাযথ বণ্টন নিয়ে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তারের সাথে প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলের কথা কাটাকাটি হয়েছিলো বহুবার। বেতনের প্রসঙ্গ নিয়ে প্রায়ই শিক্ষক কনফারেন্স হল উত্তপ্ত থাকে বলে জানান তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারী।
সবশেষ ঈদ-উল-আযহার পূর্বে যে করেই হোক শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হবে বলে একযোগে দাবি জানান সকলে। প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল একাধিকবার বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা না করায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে।
গত ০৫-০৮-২০১৯ তারিখে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার সর্বশেষ প্রতিশ্রুতি দেন। নির্দিষ্ট সময়ে বেতন প্রদানের পূর্বে সবাই জানতে পারেন মোট বেতনের মাত্র ১৫ শতাংশ দেওয়া হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের। এ সময় ক্ষোভে শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষককে স্কুলের পিলারের সাথে বেঁধে রাখার হুমকি দেন। একই সময়ে শিক্ষকদের পক্ষে একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, চাঁদপুরে আরও স্কুল সরকারি হয়েছে, সকল স্কুলের শিক্ষকগণ বেতন পাচ্ছেন, শুধু আপনিই আমাদের বেতন দিতে দিচ্ছেন না। আপনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে অযোগ্য। বেতন দিতে না পারলে অতি দ্রুত পদত্যাগ করুন।' এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের পক্ষে কোনো শিক্ষক না থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি বর্তমানে ১৫ শতাংশ বেতন গ্রহণ করার জন্য বলেন। ঈদের পর স্কুল খুললে বাকি টাকা দেয়ার ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। ঈদের পর ৫ কর্মদিবস অতিবাহিত হলেও প্রধান শিক্ষক শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।
শুধু বেতন প্রদানের ক্ষেত্রেই অনিয়ম নয়, স্কুলের বোর্ড পরীক্ষার্থীদের কোচিংয়ের অর্থ শিক্ষকদের মধ্যে বণ্টনের ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছিলো অনিয়ম। চলতি বছর ফ্রেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার পূর্বে শিক্ষার্থীদের কোচিং ক্লাসের অর্থ বণ্টন করতে গিয়ে কতিপয় শিক্ষকের মধ্যে অর্থ বণ্টন করা হয়। কোচিং থেকে বণ্টনকৃত বরাদ্দের সর্বোচ্চ ভাগ ৪০-৫০ হাজার টাকা পান প্রধান শিক্ষক নিজেই। স্কুলের ১৫ জন শিক্ষক কোচিং ফি থেকে কোনো অর্থ না পাওয়ায় তারা ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। যেখানে ১১জন শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষর রয়েছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের শিক্ষক কনফারেন্স হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে অভিযোগকৃত ১৫জনকে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও প্রধান শিক্ষক তা উপেক্ষা করে মাত্র ২ হাজার টাকা দেয়ার জন্যে রাজি হন। শিক্ষকরা ২ হাজার টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কেউ কোনো অর্থ গ্রহণ করেননি। ২২ আগস্ট দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে ‘ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট মডেল হাই স্কুলে অনিয়ম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে ঐ দিনই তড়িঘড়ি করে ১৫ শিক্ষককে কোচিং ফি বাবদ ৪ হাজার টাকা করে প্রদান করেন তিনি।
গত জুলাই মাসে চাঁদপুরে আসেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)-এর পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান খান। তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শিক্ষকদের সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, যে সকল স্কুল সদ্য সরকারি হয়েছে সেসব স্কুল আত্মীকরণের পূর্ব পর্যন্ত বেতনের স্কুল অংশ যত ছিলো তত প্রদান করে যাবেন। বেতনের সরকারি অংশ এরিয়া বিল সহ পরবর্তীতে প্রদান করা হবে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষকরা চলার জন্যে স্কুল অংশের বেতন শতভাগ প্রদান করবেন।
মাউশির পরিচালকের এমন বক্তব্যে নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট মডেল হাই স্কুল থেকে ঐ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সহকারী শিক্ষকগণ। স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষিকা জানান, পরদিন স্কুলে গিয়ে আমরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজলকে বললে তিনি বলেছিলেন, 'যিনি বলছেন তার কাছ থেকে লিখিত নিয়ে আসেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কত কথাই বলে।'
ফরিদগঞ্জ এ. আর. পাইলট মডেল হাই স্কুলের মত জেলার বাকি যে সকল স্কুল সদ্য সরকারি করা হয় দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে কথা বলা হয় সে সকল স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সাথে। এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, আমরা যথারীতি প্রতি মাসে মাসে পূর্বের ন্যায় স্কুল অংশের বেতন দিচ্ছি। আমাদেরকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও একই নির্দেশ দিয়েছেন। মতলব জেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও ছেঙ্গারচর মডেল হাই স্কুল থেকেও জানানো হয়েছে একই কথা।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ এ.আর. পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার দীর্ঘ মাস বেতন না পাওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে স্কুলের শিক্ষকদের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।
স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা বহুবার বেতনের তাগিদ দিয়েও পাইনি। কিছুদিন আগে মাউশি পরিচালক চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে আমাদেরকে পূর্বের মত বেতন দিতে বলেন। কিন্তু আমরা তা হেড স্যারকে বলার পরও তিনি বেতন দেননি। বরং বলেন, আমার কাছে লিখিত কপি দিতে হবে। উনার মৌখিক কথায় বেতন দেওয়া যাবে না। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা কোনো শিক্ষকই সন্তুষ্ট নই।
স্কুলের অপর সহকারী শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া বলেন, আমরা স্যারকে বেতন দেওয়ার কথা বলেছি। স্যার বলেছেন উপরের নির্দেশ আছে, স্কুল যেহেতু সরকারি হয়ে গেছে তাই ছাত্র-শিক্ষক উভয়ের বেতন কমাতে হবে। দীর্ঘ ৭ মাসের বেতন না পাওয়ায় গত রমজানের ঈদ আমাদের খুব কষ্টে কেটেছে।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক হাসান গাজী বলেন, ডিজি ও পরিচালকের কথা উপেক্ষা করে আমাদের প্রধান শিক্ষক আমাদের বেতন বন্ধ করে রাখেন। কোরবানি ঈদের পূর্বে প্রতিবাদের মুখে পড়ে প্রধান শিক্ষক স্যার মাত্র ১৫% বেতন দিতে রাজি হন। আমরা শিক্ষকরা তার কাছ থেকে আরও বেশি বেতন দাবি করলে তিনি বারবারই বলেন, ১৫% নিলে নেন নইলে পরবর্তীতে এই ১৫% বেতনও পাবেন না। তখন আমরা শিক্ষকরা উনাকে বলি, আপনি বেতন দিতে না পারলে প্রধান শিক্ষক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আপনি এই চেয়ারের অযোগ্য। যিনি শিক্ষকদের বেতন দিতে পারবেন তিনি বসুক এই চেয়ারে।
হাসান গাজী আরও বলেন, আমার চাকরি জীবনে আমি এ স্কুলে ৫জন প্রধান শিক্ষক পেয়েছি। কেউই আমাদের শিক্ষকদের রুজি-রোজগারে হাত দেননি। একমাত্র বর্তমান প্রধান শিক্ষকই আমাদের কাঁদিয়েছেন। আমি উনার কাছ থেকে এখনও ২০১৪ সালের বেতন পাই। তিনি দেই, দিবো, দিচ্ছি করে করে এখনও দেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের অপর একজন সহকারী শিক্ষিকা বলেন, স্যার ৭ মাস বেতন দেননি তাতে যতটা না কষ্ট পেয়েছি, বেতন দিবেন দিবেন বলে যে একের পর এক তারিখ পরিবর্তন করেছেন, তাতে এর চেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছি। হজ¦ করে আসার পর কোনো মানুষ এত বেশি মিথ্যা বলতে পারে তা হেড স্যারকে না দেখলে বুঝতামই না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে কথা বলা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)-এর পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নানের সাথে। তিনি বলেন, সদ্য সরকারি হওয়া স্কুলগুলোর বেতন প্রাপ্তির বিষয়ে আমি চাঁদপুর গিয়ে শিক্ষকদের সামনে যে বক্তব্য রেখেছি আমি এখনও একই কথা বলছি। স্কুলগুলো আত্মীকরণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষকরা বেতনের স্কুল অংশসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা যেভাবে পেয়েছে এভরিথিং এখনও ঠিক সেভাবেই পাবে। এক্ষেত্রে যদি ফরিদগঞ্জের স্কুলটি নির্দেশ না মানে তবে অবশ্যই প্রধান শিক্ষক অপরাধ করেছেন। স্কুলের শিক্ষকরা এতদিন বেতন না পেয়েও কেন ডিজি বরাবর অভিযোগ করেননি আমি তা ভেবেই অবাক হচ্ছি। বিষয়টি আমাদের নজরে আনার জন্যে আপনাদের (সাংবাদিকদের) ধন্যবাদ।