• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলপথে দৈনিক আট হাজার যাত্রী চট্রগ্রাম যাচেছ

আসন কম হওয়ায় যাত্রীদের দুভোর্গ চরমে ॥ হাজীগঞ্জে টিকেট প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশ:  ১৮ আগস্ট ২০১৯, ১৪:৪২
শওকতআলী
প্রিন্ট

চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলপথে দৈনিক আট হাজার যাত্রী চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রাম যাচেছ বলে পরিসংখ্যানে জানা গেছে। এ পথে ট্রেনের আসন যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় যাত্রীরা প্রতিদিন চরম দুভোর্গ পৌহাতে হচেছ। চাঁদপুর থেকে চট্রগ্রামের উদ্দের্শে যাওয়া যাত্রীবাহী ট্রেন মেঘনা এক্যপ্রেসের ট্রেনের টিকেট হাজীগঞ্জ স্টেশন হতে  টিকেট প্রতি  ৮০ থেকে ১০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অসংখ্য ভুক্তভোগী যাত্রীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। এ স্টেশনে ঈদ পরবর্তী যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে দেখা যাচেছ প্রায় ২শতাধিক। এ স্টেশনের বুকিং কøার্ক মারুফ হোসেন জানিয়েছেন,এখান থেকে মেঘনা ট্রেনের যাত্রীর আসন রয়েছে মাত্র ৩০টি। বাকী যাত্রীরা বেশি অর্থ দিয়ে টিকেট করেও অতি কস্ট শিকার করে দাড়িয়ে,ট্রেনের ছাদে ঝুকিঁ নিয়ে ও মেজেতে বসে গাদাগাদি করে দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যেতে হচেছ বলে যাত্রীদের সাথে আলাপকালে ও সরোজমিনে দেখা গেছে।

 এ বিষয়ে যাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে জানা গেছে,২০০৪ সাল থেকে চাঁদপুর থেকে ট্রেনে চট্টগ্রামে যাওয়া-আসা করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা প্রভাষক সুজন আরিফ।  কিন্তু এবার তাঁর ট্রেনে যাওয়াটা ভিন্নরকম। সপরিবারে ২১টি টিকেট নিয়ে যাচ্ছেন চট্টগ্রামে। সেখান থেকে যাবেন সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ।  সৈকতের তীরে বধূ সেজে  অপেক্ষা করছেন তাঁর  রমণী।
১৬ আগস্ট শুক্রবার ভোরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ রেল স্টেশনে এভাবে মেঘনা এক্সপ্রেসের যাত্রী হলেন প্রায় দুই শতাধিক।
রেল স্টেশনে একাধিক যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা গেছে,  প্রতিটি টিকিটের বিপরীতে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হচ্ছে। এ রেল স্টেশনে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নেই কোন নিরাপত্তাকর্মী।

ট্রেনের যাত্রী শাহাবুদ্দিন বলেন,  আমি দুইটি টিকেট নিয়েছি ৫০০ টাকা দিয়ে। অথচ টিকেটের মূল্য ১৬৫ টাকা করে ৩৩০টাকা।
আরেক যাত্রী জুয়েল রানা তালুকদার বলেন, ঈদ উপলক্ষে রেলস্টেশন গুলোতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ থাকা প্রয়োজন থাকলে ও এ স্টেশনে কোন যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ নেই।

হাজীগঞ্জ রেল স্টেশনের কর্মরত স্টেশন মাস্টার মারুফ হোসেন বলেন, হাজীগঞ্জ থেকে মাত্র ৩০ টি সিট বরাদ্দ রয়েছে। আমরা অতিরিক্ত ভাড়া নেই না। এখানে যাত্রী রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক। শুক্রবার সকালে মেঘনা এক্সপ্রেস এর জন্য বরাদ্দ টিকিট শেষ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত প্রায় দেড়শতাধিক সাধারণ যাত্রী টিকিট নিয়েছেন। এর পর পূর্বে ভোর ৪টা৩০ মিনিটে চট্রগ্রাম যাওয়া স্পেশাল ট্রেনের ছাদের উপরে প্রায় শতাধিক যাত্রী ছিল বলে তিনি জানান।

সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা ঈদ স্পেশাল ও নিয়মিত  মেঘনা এক্সপ্রেসে সবকটি স্টেশন থেকে যাত্রী উঠছে। চাঁদপুর বড় স্টেশন ও কোর্ট স্টেশন রেলস্টেশন থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক, মধুররোড থেকে ৮০ জন, হাজীগঞ্জ থেকে ৩০ জন, মেহার ৬০ জন, চিতশী থেকে ৩০ জন, লাকসাম থেকে দুই শতাধিক যাত্রী উঠছে। এভাবে প্রতিটি ট্রেনে প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার যাত্রী চট্রগ্রাম যেতে দেখা যাচেছ।  ঈদ স্পেশাল টে্েরন দৈনিক চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রায় আট হাজার যাত্রী যাতায়ত করতে দেখা যাচেছ। অথচ এ পথের প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে মাত্র ৮'শ থেকে  এক হাজার যাত্রীর ধারণক্ষমতা । যার ফলে  প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে হচেছ ঝুকিঁপূর্ন অবস্থায়।  

চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার মোঃ জাফর আলম জানান, আগামী ১৯ আগস্ট সোমবার পর্যন্ত, চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রূটে ঈদ স্পেশাল ট্রেনগুলো চলাচল করবে। প্রতি বছরের ন্যায় বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় যাত্রীদের জন্য চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলপথে ২ জোড়া যাত্রীবাহী বিশেষ  ঈদ স্পেশাল ট্রেন দিয়েছে।

চাঁদপুর রেল স্টেশনের  সহকারী মাস্টার মোঃ শোয়েবুল ইসলাম শিকদার বলেন, ঈদ স্পেশাল-১,২,৩ ও ৪ চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করছে। যাত্রীবাহী ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ  করা হয়েছে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর  সাধারণ  প্রতিযাত্রীর জন্যে ১শ’ টাকা। চট্টগ্রাম-ফেনী ৫৫ টাকা, চাঁদপুর-লাকসাম ৩৫ টাকা, চট্টগ্রাম-লাকসাম ৭৫ টাকা, চাঁদপুর-নাঙ্গলকোট ৪০ টাকা ও চট্টগ্রাম-নাঙ্গলকোট ৭০ টাকা। এ রুটে যাত্রীদের দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে চট্রগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে,তিনি জানান,অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি,আমার দপ্তরের সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।