• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরাণবাজারে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন, ১৫ বসত ঘর বিলীন, হুমকির মুখে হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্স

প্রকাশ:  ০৪ আগস্ট ২০১৯, ১৭:০৫ | আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০১৯, ১৭:৩৭
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে মেঘনার ভাংগনে এভাবে বিলীন হয়ে যাচ্ছে হরিসভা ও রনাগোয়াল এলাকা।
প্রিন্ট
চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের পুরাণবাজার হরিসভা পয়েন্টে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।শনিবার রাত পৌনে ন’টার সময় হঠাৎ নদীর তীব্র স্রোতের তোড়ে শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ২শ’ মিটার ব্লকবাঁধ ভেঙে এ ভাংনের সৃস্টি হয়েছে। রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ওই এলাকার সেমি পাকা ও টিনের বসতঘর ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ব্যবসায়ি মরন সাহার বাড়ির অস্তিত্বই বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে হরিসভা এলাকার ৪টি মন্দির ও চলাচলের সড়ক। ভাঙনের মুখে থাকা বহু বসত ঘর ভেঙে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ওই এলাকার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ। 
 
রাতেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বালি ভর্তি ৫শ’ জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। ভাঙনের শিকার পরিবার গুলো হচ্ছে-হরিসভা এলাকার গুপিনাথ সাহা, আদিনাথ সাহা, শম্ভুনাথ দে, সুশান্ত দে, মানিক সাহা, সঞ্জয় চক্রবর্তী, বিমল দে, দ্বীপক দে, ধ্রুবরাজ সাহা, সুনীল দে, শ্যামল দে, ওয়াদে আলী শেখ, অঞ্জু শেখ, আমজাদ আলী মুন্সি ও কার্তিক সাহা।
 
চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায় জানান, ভাঙন শুরু হওয়ার পরেই আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেছি। গত বছরও একই স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। স্থানীয় সাংসদ ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি রক্ষায় স্পেশাল বরাদ্দ দেন। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার সঠিকভাবে কাজটি সম্পন্ন না করায় আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় ভাঙন অব্যাহত থাকলে আরো বসতিসহ হরিসভা, কালি, স্কন ও লোকনাথ মন্দির মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
 
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান ও পাউবোর পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, এ যাবত দেড় হাজার জিও ব্যাগ ভর্তি বালু বস্তা ফেলা হয়েছে। আরো ফেলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। উজানের পানির চাপে মেঘনায় সৃস্ট স্রোতের তীব্রতাই এ ভাঙনের মুল কারন বলে তিনি জানিয়েছেন। পুরাণবাজার হরিসভা পয়েন্টের প্রায় ৫’শ মিটার শহর রক্ষাবাঁধ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি উধ্বতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 
 
পৌর কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী মাঝি জানান, স্থানিয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা দলীয় নেতা-কর্মিরা সারা রাত জেগে ছিলাম। মানুষের পাশে ছিলাম।
এদিকে নদী ভাঙগনের খবর পেয়ে পুলিশ সুপার,প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ,স্থানিয় জনপ্রতিনিধিগণ,আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবীর বিন আনোয়ার চাঁদপুরের নদী ভাংগন স্থান পরির্দশন করেছেন। আজ সোমবার পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম চাঁদপুর সফরে আসছেন। বসতঘর, ভিটে-মাটি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে থাকছেন খোলা আকাশের নীচে। 
 
উল্লেখ্য, পদ্মার ভাংগনে শরিয়তপুরের নড়িয়া যেভাবে এলাকা বিরীন হয়েছে। সেই নদী ভাংগন এখন চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের পুরাণবাজার হরিসভা ও রনাগোয়াল এলাকায় দেখা দিয়েছে। ভাংগনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহন করা না হলে এখানকার বিস্তৃীর্ণ এলাকা নদীতে চলে যাবার আশঙ্কা করছেন স্থানিয়রা।