ফরিদগঞ্জে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর মৃত্যু!
রোগীর স্বজনরা দায়ী করছে ডাক্তারের অবহেলা, ডাক্তার বলছে ভিন্ন কথা


অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ে সুুমী নামে (২৫) এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ভর্তি হয়েছিল হাসপাতালে। ভর্তির কয়েক ঘন্টা পরই ওই নারীর মৃত্যু ঘটেছে হাসপাতালেরই বেডে। রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা বলছেন, চিকিৎসায় ডাক্তারের অবহেলায় এমন মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ডাক্তার বলছেন সুমী তার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সচেতন না থাকায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার ফরিদগঞ্জের ডায়াবেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতালে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে এক পর্যায়ে হাসপাতালে প্রাঙ্গণে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ এসে ওই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চরভাগল গ্রামের জসিম উদ্দিনের স্ত্রী সুমি আক্তারের (২৫) পেট ব্যথা শুরু হলে গত মঙ্গলবার রাত ১২টায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর ওই রাতে একাধিকবার চেষ্টা করার পরও সুমীর চিকিৎসার জন্যে ডাক্তার আসেনি। পরের দিন বুধবার সকাল ১১টার সময় ডাক্তার এসে আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর পর রিপোর্ট দেখে ঢাকায় রেফার করেন। রাতে গ্যাসট্রিকের ও ব্যথার দু’টি ইনজেকশন পুশ করা হয়।
এ বিষয়ে উক্ত হাসপাতালের মালিক ডাক্তার মোঃ সাদেকুর রহমান (এমবিবিএস) জানান, ওই রোগীটি তার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ২৪ মাত্রা নিয়ে রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে যে কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারীর যে কোনো মুহূর্তে মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা থাকে। সুমীর ডায়াবেটিস থাকার তথ্যটি তারা ভর্তির সময় গোপন রেখেছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার সাদেকুর রহমান আরো বলেন, চিকিৎসায় অবহেলায় নয়, মূলত রোগীর অসচেতনতাই মৃত্যুর জন্যে দায়ী। সুমীর অবস্থা বেগতিক দেখে তার উন্নত চিকিৎসার জন্যে আমরা ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছি। রোগীকে তার আত্মীয়-স্বজনরা ঢাকায় নিতে দেরি করায় অকালেই সুমী হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম শিপন এ প্রতিনিধিকে বলেন, কোনো ডাক্তারই ভুল চিকিৎসা দিয়ে তার কষ্টে গড়া হাসপাতালের সুনাম ও সুখ্যাতি বিসর্জন দিতে চান না। শুধু তাই নয়, কোনো ডাক্তারই চান না ভুল চিকিৎসায় তার হাতে রোগী মারা যাক। চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতালে মৃত্যু হলেই চিকিৎসার অবহেলা কিংবা ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গেছে অতি উৎসাহীদের এমন অপপ্রচার কারো জন্যেই মঙ্গল বয়ে আনে না। তারপরও বিষয়টি আমি সিভিল সার্জনকে অবগত করেছি।