গ্রাম আদালত বিষয়ক রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণের সমাপনী
প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান অবশ্যই মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগাতে হবে : জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান


গত ৩০ জুন বিকেলে স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমানের সভাপতিত্বে দু’ সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালত বিষয়ক রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এনডিসি মোঃ মাহবুবুর রহমান এবং গ্রাম আদালতের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস। এছাড়াও এতে অংশগ্রহণ করেন প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা ‘ব্লাস্টে’র জেলা সমন্বয়কারী মোঃ আমিনুর রহমান। সমাপণী অনুষ্ঠানটি চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান বলেন, প্রশিক্ষণ মানুষের জ্ঞান, দক্ষতা ও মনোভাবের পরিবর্তন ঘটায়। গ্রাম আদালত সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে এর আইনগত বিষয়গুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। সদ্য সমাপ্ত এ প্রশিক্ষণগুলোর মাধ্যমে আইনগত জানা-শোনার ঘাটতিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আইনগত ধারণা লাভের পাশাপাশি আমাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে, যাতে আমরা এলাকার সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে পারি। সহজে ও স্বল্প সময়ে নামমাত্র মূল্যে বিচারিক সেবা প্রদানের জন্যে প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত স্থাপন করা হয়েছে। এখানে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই এলাকার দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী বিচার চাইতে আসবে। এ ক্ষেত্রে তাদের জন্যে সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে যাতে তারা ন্যায়বিচার পায়। প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞান অবশ্যই মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগাতে হবে, যেনো আমাদের সমন্বিত চেষ্টা সফল হয় এবং মানুষ উপকৃত হয়। সবাইকে দেশ প্রেম ও ভালোবাসা নিয়ে কাজ করতে হবে।
১৫-৩০ জুন ২০১৯ মেয়াদে জেলা পর্য়ায়ে মোট ৬টি ব্যাচে গ্রাম আদালত বিষয়ক রিফ্রেশার্স প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণগুলোতে ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলাধীন ৪৪টি ইউনিয়নের মোট ১৭৬ জন চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান, সচিব ও গ্রাম আদালত সহকারীগণ অংশগ্রহণ করেন। প্রথম ৩টি ব্যাচে ৮৮ জন চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান এবং পরবর্তী ৩টি ব্যাচে ৮৮ জন ইউপি সচিব ও আদালত সহকারীদের এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি’র (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত জেলা পর্যায়ে দু’ সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণগুলো অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোঃ শওকত ওসমান বলেন, ইউপি সচিব ও গ্রাম আদালত সহকারীবৃন্দ সর্বদা সমন্বয় রেখে কাজ করবেন যাতে গ্রাম আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করে বিচার কার্য চলতে পারে। বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপের সময় সীমা আইন অনুযায়ী বেঁধে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানগণ এই সময় সীমা কখনো কখনো মেনে চলতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ ক্ষেত্রে সচিবগণ সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবেন যাতে বিচার প্রক্রিয়ার কোনো অংশ বিঘিœত না হয় এবং নির্ধারিত সময় সীমা মেনে বিচার কার্য পরিচালিত হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন বিচারপ্রার্থীগণ কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন। ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে তারা যেন অযথা কালক্ষেপণের মধ্যে না পড়েন; প্রয়োজনে প্যানেল চেয়ারম্যানকে দিয়ে গ্রাম আদালতের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।