রমজানকে ঘিরে চাঁদপুরে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম
রোজার মাসকে ঘিরে চাঁদপুরে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে সব ধরণের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। এই মূল্যবদ্ধির কারণে হতাশ নিম্ন আয়ের মানুষ। সাধারণ মানুষ বলছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা এখন আর রমজানের অপেক্ষায় থাকছে না। রমজান শুরুর আগেই পরিকল্পিতভাবে সুকৌশলে রোজা নির্ভর পণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে, যাতে রমজানে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে এমন অভিযোগ করা না যায়।
তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, মূল্য কেন বাড়ছে তা তারা জানেন না। আমাদানি কারকদের কাছ থেকে এবং বড় বড় মিল থেকে তারা পণ্য কিনে স্বল্প লাভে বিক্রি করছেন।চাঁদপুরের পাইকারি বাজার স্থিতিশীল রয়েছে বলে মনে করেন চেম্বার নেতৃবৃন্দ।
পাইকারি পণ্য ব্যবসায়ি নেপাল সাহা ( বেঙ্গল ট্রেডিং) ও বিপ্লব সাহা(সহদেব সাহা) জানান, রোজায় দাম বাড়েনি, বাজার ডাউন।
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের গৃহীনি পারভিন বেগম( ৫০) ছেলে ইয়াছিনকে(১৮) সাথে নিয়ে পুরাণবাজার মসজিদ পট্টির মাহবুব খানের দোকানে রোজার বাজার করার জন্য আসেন। তিনি জানান সব জিনিষেরই দাম বেড়েছে। গুঁড়ো দুধের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ডিমের শ কয়দিন আগে ছিল ৬০০ থেকে সাড়ে ৬'শ টাকা, এখন প্রতি ডিমে এক টাকা বেড়ে ৭'শ টাকা শ' হয়েছে।।
বয়লার মুরগীর কেজি দেড়'শ টাকা, মাছের বাজারে আগুন। গুড়া চিংড়ি কিনতে টাকা লাগবে কেজিই ৬'শ টাকা ।পোয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের কেজি হাকা হচ্ছে ৭ থেকে ৮ 'শ টাকা। দাম স্থিতিশীল আছে ভোজ্য তেল, হলুদ মরিচে। দামা বাড়ানো হয়েছে গুড়, চিড়া, ইসবকলের ভুষি, দেশি মুশুর, মুগ ও খেসারি ডালে। ৬৫ টাকা কেজির ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৮০ টাকায়। ১৫ টাকার পেঁয়াজ ২০/২২ টাবা। ৪০ টাকা রসূন ৭০/৭৫ টাকা। চায়না রসূনেরর দাম আরো বেশি। আদা কেজিতে ২০/২৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। খেজুর নরমাল ৭০/৮০ টাকা থেকে প্রকার ভেদে সাড়ে ৩'শ টাকা কেজি। সব ধরনের ফলের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৫০ টাকা কেজির আপেল ২০০ টাকা ১১০ /১২০ টাকার মাল্টা ১৫০ টাকা কেজি। আংগুর আড়াই'শ টাকা।
অবিলম্বে বাজার তদারক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে রমজান মাসে বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা। সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ, সবজি,ফল ফলাদি বাজারের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ফলে রোজা শুরুর আগে থেকেই পেঁয়াজসহ ছোলা, চিনি, ডাল ও খেঁজুরকে টার্গেট করা হয়। শহরের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায় আদা প্রতি কেজিতে বেড়ে ২০ টাকা, রসুন প্রতিকেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা দরে, মুসর ডাল প্রতিকেজিতে ১৫ টাকা করে, চনা প্রতিকেজিতে ৬ টাকা, গুড়া দুধের মূল্য প্রতিকেজিতে ৪০ টাকা করে বেড়েছে। এছাড়াও কোন কারণ ছাড়াই চালের মূল্য বেড়েছে। মিনিকেট ২৮ এর বস্তা (৫০ কেজি) প্রতি বেড়েছে ৬০ টাকা। বেতী চালের দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় ৭০ টাকা, সিদ্ধ মেনিকেট বেড়েছে বস্তা প্রতি প্রায় ১৫০ টাকা করে বেড়েছে।, একটি সূত্রে জানাগেছে রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্য দাম বাড়াতে প্রতি বছরই একটি বিশাল সিন্ডিকেট কাজ করে। সরকার কঠোরভাবে বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করলে তারা মূল্য বাড়াতে পারবে না।
চাঁদপুর জেলা শহরের ২২ থেকে ২৫ জন পাইকারি পণ্যের ফাস্ট পার্টি রয়েছেন।তাদের অবস্থান পুরাণবাজার,পালবাজার এলাকায়।এছাড়া হাজীগঞ্জে বড় পাইকারি রয়েছেন।পুরাণবাজার মসজিদ পট্টি ও ট্রাক রোড়ে রয়েছে পেঁয়াজ - আদা রসুন ও আলুর পাইকারি বাজার।
পাইকারি ব্যবসায়িরা হলেনঃ- কার্তিক সাহার বিকে স্টোর,সুবল পোদ্দারের সুভাষ পোদ্দার,শিমূল ট্রেডার্স, আজাদের জনতা ফুড,রণি পোদ্দার, প্রমোদ দাসের দয়াময় ভান্ডার, বেঙ্গল ট্রেডিং এর নেপাল সাহা, সহদেব সাহার বিপ্লব সাহা, মনোরঞ্জন সাহা, দিলীপ ঘোষ, বিজন দের পদ্মা ভান্ডার, মানিক সাহার নিউ ত্রিনাথ ভান্ডার, দীলিপ সাহা, ত্রিনাথ ভান্ডার, মানিক পাল, বিশু পোদ্দার, রফিক স্টোর, জেনারেল স্টোর, শুভ পাল, সুখরঞ্জন রায়, হাজী বাচ্চু পাটওয়ারি প্রমুখ। তাদের হাতেই অধিকাংশ নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে ।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান জানান, বাজার দর নিয়ন্ত্রণ রাখতে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। এতে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করা হবে।