মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা
শোকাবহ পরিবেশে হাজীগঞ্জের সোহেলের লাশ দাফন


গত রোববার মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাজীগঞ্জের আনোয়ার হোসেনের ছেলের লাশ শনিবার সকালে এসে বাড়িতে পৌঁছায়। লাশ আনার পর থেকে এলাকাসহ সোহেলের পুরো পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এদিকে শনিবার বাদ জোহর স্থানীয় দেবীপুর বাজার মসজিদে জানাজা শেষে সোহেলকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সোহেল হাজীগঞ্জের ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বশির মেম্বার বাড়ির আনোয়ার হোসেনের একমাত্র ছেলে। তিনি চার বোনের একমাত্র ভাই। সোহেলের লাশ বিনা খরচে দেশে পৌঁছে দেয়ার জন্যে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বাবা আনোয়ার হোসেন।
সাড়ে ৮ মাসের একমাত্র কন্যা সন্তানের জনক সোহেল এসএসসি পাস করেন ২০১৩ সালে। ভাগ্য বিড়ম্বিত সোহেল দেশে বেকার থাকার কারণে সম্প্রতি প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে তাকে মালয়েশিয়া পাঠান তার বাবা আনোয়ার হোসেন। মালেশিয়ায় গত রোববার গভীর রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় সোহেলসহ ৫ বাংলাদেশী নিহত হন।
শনিবার সকালে সোহেলের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, ভোর হতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ সোহেলকে একনজর দেখার জন্যে বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করে। স্ত্রী স্বামীর লাশ আনতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ভাইসহ ঢাকা গেছেন।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক সকাল ৯ টার দিকে সোহেলের বাড়ির সামনে এসে লাশবহনকারী অ্যা¤ু^লেন্স থামে। অজ্ঞান অবস্থায় স্ত্রী শাহানারাকে অ্যা¤ু^লেন্স থেকে নামানোর পরেই এলাকাবাসী সোহেলের লাশ নামায়। এ সময় এলাকার হাজার হাজার নারী-পুরুষ সোহেলের লাশ দেখতে ভিড় জমায় সড়কের উপরেই। এর আগ থেকে ঐ স্থানে একটি খালি খাটিয়া এনে রাখে এলাকাবাসী।
বাড়ির উঠানে সোহেলের লাশের বাক্স পৌঁছারে সাথে সাথে ঐ বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। এলাকাবাসী, বাবা-মা আর বোনদের আহাজারিতে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সোহেলের একমাত্র মেয়ে সোহানাকে বিভিন্নজন কোলে নিয়ে সান্ত¡না দিতে গেলেও সারাক্ষণ কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে।
বাবা আনোয়ার হোসেন বুক চাপড়িয়ে সরকারকে দোয়া করেবলেন, সেদিন আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের লাশটা চেয়েছি। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে লাশটা আমার কাছে পৌঁছে দেয়ায় আমি আর আমার পরিবার সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। আর এজন্যে আমি সরকারকে দোয়া করি।