• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

নিরাপত্তার স্বার্থে ফরিদগঞ্জ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে কামারপট্টি সরানো দরকার

প্রকাশ:  ০৮ মার্চ ২০১৯, ০১:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 সৌন্দর্য এবং নিরাপত্তার স্বার্থে ফরিদগঞ্জ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে কামারপট্টি সরানো দরকার বলে মনে করছেন উপজেলার বিশিষ্টজনরা। দীর্ঘসময় ধরে কামাররা এখানে অস্থায়ীভাবে দোকান সাজিয়ে বসছেন। হাফরের সাহায্যে কয়লায় লোহাকে পুড়িয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে দা, চাকুসহ বিভিন্ন ধারালো দেশীয় অস্ত্র বানাচ্ছেন। তারও আগে এখানে নাপিতেরা পিঁড়ি পেতে হাটে আসা লোকজনের চুল এবং দাড়ি-গোঁফ কাটতো।
উপজেলা পরিষদের ঠিক সামনেই ফরিদগঞ্জের প্রধান স্মৃতিসৌধ এবং শহীদ মিনারটি অবস্থিত। প্রতি বছর ফরিদগঞ্জ মুক্ত দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় দিবসগুলোতে উপজেলাবাসী ভাষা শহীদ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এখানে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। স্থানটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং সুরক্ষিত করতে উপজেলা প্রশাসন প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং বাস্তবায়নও করেছেন। কিন্তু এ দুটি স্থাপনার সামনে রাস্তার ফুটপাতে কামার এবং বস্ত্র ব্যবসায়ীরা দোকান সাজিয়ে এর সৌন্দর্য নষ্ট করছে।
পাশাপাশি কামারদের দোকান শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘœ ঘটানোর শঙ্কা সৃষ্টি করছে। উপজেলা পরিষদ অধিকাংশ প্রশাসনিক ডেস্ক হওয়াতে এখানে লোকজনের সমাগমও বেশি। তাছাড়া আগামী ২৪ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনের কেন্দ্রবিন্দুও উপজেলা পরিষদ। সাধারণ মানুষ এবং নেতা-কর্মীরা আশঙ্কা করছেন এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ নাও হতে পারে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটলেও ঘটতে পারে। যদি মারামারি লেগেই যায়, সেক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদের সামনে সাজিয়ে রাখা দেশীয় অস্ত্রগুলো রাগের মাথায় সাধারণ নেতা-কর্মীরা ব্যবহার করতেও পারে। সেক্ষেত্রে রক্তাক্ত ফরিদগঞ্জ দেখতে পারে উপজেলাবাসী। সে আশঙ্কা থেকে বাজার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মনের চাওয়া এখান থেকে কামারদের উঠিয়ে পশ্চিম বাজার অথবা অন্য কোথায়ও বসার ব্যবস্থা করলে ভালো হয়। এ আশঙ্কা যে একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না তার প্রমাণ চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি। সেদিন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ ঠিক করার জন্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করে। এ সভাকে কেন্দ্র করে দু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। আর এ সংঘর্ষে সেদিন রাস্তার পাশে সাজিয়ে রাখা সেই দেশীয় অস্ত্রগুলো ব্যবহার করা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন। স্থানটি উপজেলা পরিষদের সামনে হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলো মিছিলের জন্যে এ সড়কটিকেই ব্যবহার করে আসছেন।
এ ব্যাপারে বাজার ব্যবসায়ী কমিটির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজার ব্যবসায়ীসহ সকল মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এখান থেকে কামারপট্টি সরানো দরকার। জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মিছিলকারীদের কেউ কেউ কামারপট্টি থেকে দা এবং ছুরি নিয়ে গেছে। সেদিন পুলিশের ভূমিকা না থাকলে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো। সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, মিছিলকারীরা এ রাস্তাটি ব্যবহার করবে। বিপদ ঘটার আগে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মমতা আফরিন চাঁদপুর কণ্ঠকে এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে কামারপট্টি স্থানান্তর করতে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের সাথে এবং পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।