• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা

ঢাকা-চাঁদপুর নৌপথের লঞ্চের কেবিনগুলো যেনো এখন তরুণ-তরুণীদের নিরাপদ প্রমোদাগার

প্রকাশ:  ০৬ মার্চ ২০১৯, ১০:৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ঢাকা-চাঁদপুর নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো যেনো এখন তরুণ-তরুণীদের আপত্তিকর সম্পর্কের মিলনস্থলের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে। আবার পেশাদার কিছু দেহ ব্যবসায়ীও এ রূটের লঞ্চকে তাদের নিরাপদ জায়গা হিসেবে খুঁজে নিয়েছে। কম সময়ের মধ্যে তথা দিনে দিনে আসা-যাওয়া করার সুবিধা এবং কোনো ঝামেলা না থাকায় ঢাকা-চাঁদপুর রূটের লঞ্চকে তারা নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে। এরা ঢাকা থেকে এক লঞ্চে চাঁদপুর এসে অপর লঞ্চযোগে আবার দিনে দিনেই চাঁদপুর থেকে ঢাকা চলে যায়। এসব তরুণ-তরুণী লঞ্চের আনসার ও বয়দের ম্যানেজ করে অধিক মূল্যে কেবিন ভাড়া করে পুরো সময়টাই কেবিনে কাটায়। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছেÑলঞ্চগুলোতে কলগার্ল তথা দেহ ব্যবসায়ীদের বিচরণ সম্প্রতি বেড়ে গেছে। এরা কেবিন ভাড়া করে ঢাকা থেকে চাঁদপুর আসে আবার একইভাবে তারা চাঁদপুর থেকে ঢাকা যাচ্ছে। কোনো কোনো লঞ্চের অর্ধেক সংখ্যা থাকে এদের দখলে। এদের কারণে অনেকেই লঞ্চে কেবিন পাচ্ছে না।
গত রোববার সকালে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায় অর্ধশত জোড়া কপোত-কপোতী তথা তরুণ-তরুণী চাঁদপুর ঘাটে ভিড়ার পর এক লঞ্চ থেকে নেমে অন্য লঞ্চে করে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে এমভি মিতালি লঞ্চে। প্রায় ২০ জোড়া তরুণ-তরুণীকে দুপুর সাড়ে ১২টায় মিতালী লঞ্চ থেকে চাঁদপুর ঘাটে নেমে দুপুর ১টায় আবার তারাই চাঁদপুর ঘাট থেকে ঢাকার পথে ছেড়ে যাওয়া আব-এ-জমজম লঞ্চে উঠে। শুধু মিতালী লঞ্চেই নয়, সোনারতরী, বোগদাদিয়া ও তাকওয়া লঞ্চের কেবিনে করে এসেও চাঁদপুর ঘাটে নেমে পরবর্তী লঞ্চের কেবিন ভাড়া করে আবার ঢাকার পথে যাত্রা করে।
    অতীতে লঞ্চে এমন ঘটনা ঘটায় হত্যাকা-ের ঘটনাও ঘটে। ২০১৭ সালে আব-এ-জমজম লঞ্চের কেবিন থেকে এক অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। অজ্ঞাত হওয়ায় তার লাশটি তখন আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে তখন লঞ্চ মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে বিপ্লব সরকার একটি মামলা দায়ের করেন। তাছাড়া একই বছর রফরফ লঞ্চে এক তরুণী ধর্ষিত হয়। এ ব্যাপারেও চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্ত করেন মডেল থানার তখনকার সেকেন্ড অফিসার বর্তমান ইন্সপেক্টর মোঃ মনির হোসেন। তাছাড়া লঞ্চে আরও অনেক ঘটনা অতীতে ঘটেছে। এসব ঘটনা রোধে জেলা পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বিপিএম, পিপিএম-এর সুদৃষ্টি কামনা করছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।
    দেখা গেছে যে, প্রতিদিন এক ধরনের উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে লঞ্চযোগে চাঁদপুর আসে। ঘাটে নেমেই আবার তারা অন্য লঞ্চে করে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে। এদের মধ্যে প্রেমিক-প্রেমিকা জুটি দু’ একটি থাকলেও অধিকাংশই কলগার্ল।
    মিতালী লঞ্চের একজন স্টাফ গত রোববার জানান, আজকে সবচেয়ে বেশি জোড়া এসেছে। তারা চাঁদপুর ঘাটে নেমে আবার আব-এ-জমজম লঞ্চে ঢাকা চলে যাচ্ছে। এরা সবাই কেবিনে করে এসেছে। ২০১৭ সালে যে ঘটনা ঘটেছিলো, তেমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছি। আর এ ধরনের ঘটনা ঘটলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে আইনী ঝামেলায় পড়তে হয়। কেননা পূর্বের ঘটনাগুলোতেও লঞ্চ স্টাফদের জেল খাটতে হয়েছে। যার ফলে এখন থেকেই যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে যেনো পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। পাশাপাশি যেসব তরুণ-তরুণী কেবিন ভাড়া করতে যায়, তাদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা যেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ লিপিবদ্ধ করে রাখে। তাহলেই এদের উপদ্রব কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।


 

 

সর্বাধিক পঠিত