• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা

প্রকাশ:  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ জামানের সভাপ্রধানে এবং ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া ও সাংবাদিক এমআর ইসলাম বাবুর যৌথ পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান। তিনি তাঁর আলোচনার শুরুতে বলেন, শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা জীবন দিয়েছিলেন তাঁদেরকে। সমস্ত বাঙালি জাতিকেও কৃতজ্ঞতা জানাই। চাঁদপুরের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপিকে কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি যেনো শিক্ষামন্ত্রী থেকে শিক্ষাখাতকে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। তিনি বলেন, চাঁদপুরে যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে তাদের জন্যে আমরা কিছু করতে চাই। আপনারা এ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তথ্য আমাদেরকে জানাবেন। জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশকে গড়তে হলে আজকের এ একুশে বইমেলাসহ আরও ক্ষুদ্র আয়োজনকে বৃহৎ করে দেখতে হবে। তবেই এ দেশ এগিয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির বিপিএম পিপিএম বলেন, শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি যাঁদের আত্মত্যাগের ফলে বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলছি। আজকের যে ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হলো তাতে ’৪৭ থেকে ’৭১-এর প্রেক্ষাপট ফুটে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, ’৪৯ থেকে ’৫২ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে দেখা না যাওয়ার কারণ হচ্ছে, তখন তিনি কারাগারে ছিলেন। গঠন করা হয় যুক্তফ্রন্ট। ১৯৫৬ সালে এ যুক্তফ্রন্টকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদ গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষায় তখন বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিকভাবে ২১ ফেব্রুয়ারিকে স্বীকৃতি দেয়। আমাদের সন্তানদেরকে বাংলা ভাষা শিখাতে হবে। আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে ভালোবাসতে হবে।
ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু বলেন, আজকে আমরা গভীরভাবে স্মরণ করি ঢাকায় অগ্নিকা-ে যারা নিহত হয়েছেন তাদেরকে। একই সাথে মাতৃভাষার জন্যে রফিক, সফিক, জব্বার, বরকত ও সালামদেরকেও স্মরণ করছি। জাতির জনকের নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। ইউনেস্কো আন্তর্জাতিকভাবে এ ভাষা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। বিশ্বের মাঝে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমরা এখনও বাংলাদেশী বলে লিখে থাকি। আমরা  বাংলাদেশী থাকতে চাই না, বাঙালি হতে চাই।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, আজকে আমরা ভাষা শহীদদের স্মরণ করছি। চাঁদপুরে ভাষার জন্যে হাজীগঞ্জের ২ যুবক মোস্তফা ও কামাল জীবন দিয়েছে। তাঁদেরকেও আমাদের স্মরণ করা উচিত। তিনি বলেন, কিছু কিছু জিনিসের জন্যে ঝুঁকি নেয়া হয়। তেমনি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলার দামাল ছেলেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছিলো। সেই থেকে রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠা পায়। ভাষার জন্যে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং শহীদ হয়েছিলেন আজকে আমরা তাঁদের স্মরণ করছি।
আরও বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন এনএসআই ডিডি ফারুক আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, সদস্য আইয়ুব আলী বেপারীসহ আরও অনেকে।
আলোচনা সভা শেষে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিচালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

 

সর্বাধিক পঠিত