আনন্দঘন পরিবেশে চাঁদপুরে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত ॥ আজ শোভাযাত্রা
হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বিদ্যা অর্চনায় দেবী সরস্বতীর পূজা গতকাল ১০ ফেব্রুয়ারি রোববার চাঁদপুরে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পূজার সকল আয়োজন শেষ হবে। মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথি ভোর থেকে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত থাকায় ভোর হতেই পূজার আয়োজকরা ব্যস্ত সময় পার করেছে। সকাল ১০টায় অধিকাংশ পূজা ম-পেই পূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোথাও রাত ৩টায় পূজার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অর্থাৎ সকাল ১১টার মধ্যে সরস্বতী পূজার কার্যক্রম সমাপ্ত হয়। নির্দিষ্ট মন্দিরগুলো ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাড়ামহল্লায় এ পূজার আয়োজন করা হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী, গৃহিণী সবাই ভোর থেকেই পূজার আয়োজন করতে শুরু করে। ভোর হতে না হতেই পুরোহিতগণ ঘট ভরার মধ্য দিয়ে পূজার কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিটি ম-পেই সকাল থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা সরস্বতীর চরণে বিদ্যা, বুদ্ধি ও জ্ঞানার্জনের জন্যে অঞ্জলী নিতে উপবাস থেকে প্রার্থনায় ব্রত হয়েছিল।
চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন পূজাম-প পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির বিপিএম পিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ¦ নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুরে কর্মরত এনএসআই’র ডিডি এবিএম ফারুক, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, সহ-সভাপতি নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী, প্রফেসর রণজিত কুমার বণিক, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী প্রমুখ।
সকাল ১০টার পর অঞ্জলী গ্রহণ শেষে সববয়সী মানুষ বিভিন্ন পূজা মন্দির ঘুরে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সরস্বতী পূজার কুশল বিনিময় করেছে। শিশু-কিশোররা পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন পূজা ম-পে আনন্দ উল্লাস করেছে। গৃহিণীরা নতুন পোষাকে সজ্জিত হয়ে মায়ের পূজায় ব্রত হয়েছিল। চাঁদপুর শহরের কালী বাড়ি মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রম এবং নতুন বাজার গোপাল জিউর আখড়ায় পূজা দেয়ার জন্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ছুটে এসেছিল। তারা সেখানেই অঞ্জলী প্রদানে ব্যস্ত সময় পার করে। আবার অনেক পরিবারের লোকজন তাদের শিশুদের শহরের রামকৃষ্ণ আশ্রম ও মিশনে মহারাজের মাধ্যমে শিশুদের এই প্রথম লেখাপড়ার জন্যে হাতে-খড়ি তুলে দেন। এছাড়া ঢাক, ঢোল, শঙ্খ-ধ্বনি ও উলুধ্বনিতে প্রতিটি পূজা ম-পেই উৎসবমুখর পরিবেশ ছিলো। আবার কোনো কোনো ম-পে ইকো সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে নানা ধরনের গান বাজিয়ে ম-পগুলোকে মাতিয়ে রাখা হয়। আয়োজকরা পূজা ম-পগুলোকে কত সুন্দরভাবে সাজাতে পারে সে প্রতিযোগিতায় নেমে আলোকসজ্জায় ফুটিয়ে তুলেছিল। বিকেলের পর থেকে চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নর-নারী সরস্বতী পূজা উপভোগ করার জন্যে চাঁদপুর শহরে আসে। গভীর রাত পর্যন্ত পূজা উপভোগ করে তারা নিজ গন্তব্যে ফিরে যায়।