• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে জায়গা না পাওয়ার অজুহাতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হচ্ছে না

প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে এমনকি প্রাণহানিও ঘটছে

প্রকাশ:  ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর জেলার মধ্যে বৃহৎ উপজেলা হিসেবে পরিচিত ফরিদগঞ্জ উপজেলায় কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই। জায়গা না পাওয়ার অজুহাতে এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হচ্ছে না। ঘনবসতি ও প্রবাসী অধ্যুষিত এ উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন। প্রতিবছরই উপজেলার কোনো না কোনো এলাকায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে থাকে। এসব অগ্নিকা-ে বসতঘর ও বিভিন্ন বাজারের দোকানঘরসহ নানা স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। এ উপজেলায় কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশর্^বর্তী হাজীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর অথবা চাঁদপুর থেকে দমকল বাহিনীকে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করতে হয়। আর ততক্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়।
ফরিদগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্যে এমপি-জনপ্রতিনিধিরা এ পর্যন্ত শুধু আশ^াসের বাণী শুনিয়েই যাচ্ছেন। কার্যত কিছুই হচ্ছে না। এমনকি ফরিদগঞ্জ আসনের সরকার দলের এমপিরাও ফায়ার স্টেশনের বিষয়ে একাধিকবার জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত আশ^াসের মধ্যেই আছে। শুধু জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না এমন অজুহাতে এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আলোর মুখ দেখেনি।
ঘনবসতিপূর্ণ এই ফরিদগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবিতে ইতিপূর্বে ভুক্তভোগী জনগণের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আবেদন নিবেদন করেই আসছে। শুধু তাই নয়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই নৌকা প্রতীক পেয়ে পৌরসভার মেয়র হিসেবে মাহফুজুল হক নির্বাচিত হওয়ার কয়েকদিন পরই ফরিদগঞ্জ বাজারে আগুন লাগে। সে সময় তাৎক্ষণিক নাগরিক সমাজের ডাকে উপজেলা সদরে মানববন্ধন করা হয়। এই মানববন্ধনে মেয়র মাহফুজুল হক ঘোষণা দিয়েছিলেন এক বছরের মধ্যেই ফরিদগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি তোলা হবে। একই দাবিতে গতবছর জেলা পরিষদের সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম রিপনের আয়োজনে পৃথক আরো একটি মানববন্ধন কর্মসূচিতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক এমপি পুত্র অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমানও তাঁর বক্তব্যে অবিলম্বে ফরিদগঞ্জবাসীর জানমাল রক্ষার স্বার্থে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্যে জোরালো দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু ফরিদগঞ্জবাসীর প্রাণের এই দাবিটি বারবার উপেক্ষিত হয়েই আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার মধ্যে একমাত্র ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাড়া বাকি সব উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ফরিদগঞ্জবাসীর, এখানে নাকি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্যে জায়গা পাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আবার জায়গা পেলেও গোপন সমঝোতার কারণে ওই জায়গা রক্ষা করতে প্রভাবশালী নেতারা জায়গার মালিকের পক্ষ নেয়। যে কারণে দীর্ঘ বছরেও এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের কাজটি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, জায়গা না পাওয়া যাওয়ায় এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হচ্ছে না, এটা ¯্রফে অজুহাত মাত্র। জনস্বার্থে যে কোনো বা যে কারো জায়গায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্যে কোনো কঠিন কাজ নয়। ব্যক্তি বিশেষের জায়গা যদি পাওয়া নাই যায়, তাহলে উপজেলা সদরেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবহৃত প্রায় ৪ একর সম্পত্তি পড়ে আছে। জনগণের স্বার্থে সরকার চাইলে উচ্চ পর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে বৈঠকে দু পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমেই এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করাটা কোনো কঠিন কিছু নয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী আফরোজের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ফরিদগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের জন্যে সরকারের উদ্যোগ রয়েছে। তবে জায়গা সমস্যাটির সমাধান হলে অচিরেই এখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ শুরু করতে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
ফরিদগঞ্জ আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমানের কাছে জনস্বার্থে এ বিষয়টির সমাধানকল্পে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদক উত্থাপন করলে তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জে অচিরেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এটি স্থাপন করতে জায়গা পাওয়া না পাওয়া কোনো বড় সমস্যা নয়। সমস্যাটা হচ্ছে জনস্বার্থে আন্তরিকভাবে কাজ করার ইচ্ছাটাই বড় সমস্যা।

 

সর্বাধিক পঠিত