ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘ হচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও ২০১৯ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তরা দলীয় প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে ফরিদগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তোড়জোড়। ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছবি সম্বলিত লেখা দিয়ে সরব তাদের কর্মী-সমর্থকরা।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরা হলেন প্রয়াত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ বারী মিয়াজী, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রয়াত মাহবুবুল বাশার কালু পাটওয়ারী এবং চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী হওয়ার সুযোগে বিএনপির প্রার্থী হাজী মোজাম্মেল নির্বাচিত হন। ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জামায়াতে ইসলামীর আঃ মোতালেব। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হন রেবেকা সুলতানা।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত আঃ বারী মিয়াজী। আঃ বারী মিয়াজী নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ান। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ এবং সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ঋণ খেলাপির কারণে আদালতের আদেশে প্রার্থিতা হারানো এমএ হান্নান। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু সাহেদ সরকার বিজয়ী হন। অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান রানা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা সম্পাদিকা রিনা নাসরিন।
২০১৯ সালের নির্বাচনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রবীণ ও নবীনদের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে তুমুল লড়াই শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরব রয়েছে অপেক্ষাকৃত নবীন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। প্রবীণদের মধ্যে এ পর্যন্ত যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তারা হলেন : বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ আবুল কাশেম কন্ট্রাক্টর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আমির আজম রেজা এবং উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান রানা।
নবীনদের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন : ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহফুজুল হক, ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন রতন, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী সফিকুর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খাজে আহাম্মদ মজুমদার, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান সউদ, চাঁদপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রিপন, জেলা পরিষদ সদস্য মশিউর রহমান মিটু, যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন রিপন, আওয়ামী লীগ নেতা ও চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ জুয়েল। এছাড়া সময় গড়ানোর সাথে সাথে আরো মনোয়ন প্রত্যাশীদের নাম উঠে আসতে পারে। এদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম তেমন একটা শোনা না গেলেও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান দুলাল ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মঞ্জিল হোসেন নাম আলোচনায় রয়েছে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলোচনা ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের সাবেক জিএস তছলিম, সাংবাদিক আবুল হাসনাত, যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সবুজ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ আলম আয়াতের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রিনা নাসরিন, সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী সেলিনা আক্তার, যুবমহিলা লীগের সভাপতি রাজিয়া সুলতানা দীপুর নাম আলোচনায় রয়েছে। এছাড়া বিএনপি থেকে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেবেকা সুলতানার নামও আলোচনায় আছে।