অভিযোগকারীর দুঃখ প্রকাশ
নারায়ণপুর সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক অসত্য অভিযোগে হয়রানির শিকার


মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১৫৫নং নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাত্র বলরাম দাসকে পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার পিতা অর্জুন দাস একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অর্জুন দাস অভিযোগটি উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ চট্টগ্রাম বরাবর দায়ের করেন। এ নিয়ে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের জের ধরে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
অভিযোগকারী বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে আমি এ অভিযোগ দায়ের করিনি। মূলত প্রতিবন্ধী হিসেবে পাস করার কোনো সুযোগ আছে কি না তা ছিল আমার জানার উদ্দেশ্য।
অভিযোগ সূত্রে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অভিযোগকারীর সন্তান বলরাম দাস অত্র বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। ১ম শ্রেণি থেকেই তার লেখাপড়ার অমনোযোগিতার বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। বলরাম দাস সম্পর্কে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা কমিটির সদস্যগণ তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিদ্যালয় সূত্রে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত কোনো পরীক্ষায় সে পাস করেনি। এমনকি প্রশ্নপত্রের সাথে উত্তর পত্রের কোন সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার অশোভনীয় আচরণে শিক্ষার্থীরা সব সময় আতঙ্কে থাকত বলে একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ এ প্রতিবেদককে জানান।
এ ব্যাপারে বলরাম দাসের পিতা অর্জুন দাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি আমার সন্তানের ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। প্রকৃত পক্ষে আমার সন্তান লেখাপড়ায় অমনোযোগী এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। প্রধান শিক্ষকের কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে আমি এ অভিযোগ দায়ের করিনি। মূলত প্রতিবন্ধী হিসেবে পাস করার কোনো সুযোগ আছে কি না তা ছিল আমার জানার উদ্দেশ্য। বিষয়টি এতোদূর গড়াবে তা বুঝতে পারিনি। বিষয়টির জন্যে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, বলরাম দাসকে পড়াশোনায় স্বাভাবিক রাখার জন্যে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিটি পরীক্ষায় সে প্রশ্নের উত্তর না লিখে ইচ্ছেমত আঁকি বুকি করে খাতা জমা দিয়ে যায়। ফলে তাকে কোনোভাবেই প্রমোশন দেয়ার সুযোগ থাকে না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহিদ খান বাবু এ বিষয়ে জানান, বলরাম দাসের ব্যাপারে তার অভিভাবক কখনোই আমাদের কাছে কোনো প্রকার অভিযোগ করেনি। বরং বলরাম দাসের প্রতিটি পরীক্ষার খাতা প্রধান শিক্ষক আমাদের দৃষ্টি গোচরে এনেছেন। আমরা দেখেছি উক্ত খাতাগুলোতে নম্বর দেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। তিনি আরও জানান, অভিযোগকারীর সন্তান বলরাম দাস বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় পরীক্ষায় পাস করতে পারে না। আমি মনে করি আমাদের বিদ্যালয়টি উপজেলায় বরাবরই সন্তোষজনক ফলাফল করে আসছে। চলতি পিইসি পরীক্ষায় ৯৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ জন এ প্লাস পেয়েছে এবং শতভাগ পাস করেছে। কোনো একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে অর্জুন দাসকে দিয়ে এ ধরনের অসত্য অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার আলী জনি বলেন, বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনাটি খতিয়ে দেখবো।