দশ বছরের উন্নয়নকে পুঁজি করে আর ভবিষ্যৎ স্বপ্নের চাঁদপুর গড়ার প্রত্যয়ে ভোটযুদ্ধে নেমে গেলেন দীপু মনি
জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে নৌকা প্রতীক গ্রহণ করে ভোটযুদ্ধে নেমে গেলেন চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডাঃ দীপু মনি। একই সময় তাঁর সাথে ছিলেন চাঁদপুর-১ আসনে মহাজোটের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। আরো ছিলেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। সাথে জেলা পর্যায়ের আরো কিছু নেতা ছিলেন। আর এ সময় রিটার্নিং অফিসার তথা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নীচে পুরো অংশ জুড়ে ছিলো হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। যারা ‘নৌকা, দীপু মনি’ স্লোগানে ছিলো মুখরিত।
রিটার্নিং অফিসার মোঃ মাজেদুর রহমান খানের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের দেয়া নৌকা প্রতীক গ্রহণ করে ডাঃ দীপু মনি জেলার শীর্ষ নেতারাসহ নীচে নেমে আসলেন। তখন হাজার হাজার নেতা-কর্মী করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানায়। সকলকে সাথে নিয়ে তিনি বিশাল মিছিলসহ শহর প্রদক্ষিণ করলেন। নেমে গেলেন আনুষ্ঠানিক ভোটযুদ্ধে। টানা দশ বছর চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে হাজার হাজার কোটি টাকার বাস্তবায়িত উন্নয়ন কর্মকা-কে পুঁজি করে এবং ভবিষ্যতে স্বপ্নের চাঁদপুর গড়ার প্রত্যয়ে গতকাল ১০ ডিসেম্বর থেকে চূড়ান্ত ভোটযুদ্ধে নেমে গেলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে ডাঃ দীপু মনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। তাঁর এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে টানা দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এ আসনটি আওয়ামী লীগ ফিরে পায়। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে মহাজোট সরকার গঠন করলে ডাঃ দীপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সরকারের পূর্ণ মেয়াদে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মন্ত্রী হওয়ার পর বড় ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প শুরু হয় চাঁদপুর সদর ও হাইমচরকে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে। তিনি প্রায় ১৯ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে সদর ও হাইমচরবাসীকে মেঘনার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করেন। এর জন্যে ব্যয় হয় প্রায় পৌনে ৪শ’ কোটি টাকা। এরপর ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় দেড়শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এমনিভাবে লাকসাম-চাঁদপুর রেললাইন সংস্কার, নার্সিং ইন্সটিটিউট, মেরিন একাডেমী, ফিশারিজ ইন্সটিটিউট, ৩২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, ২৩৭ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ, ১৫৯টি সেতু-কালভার্ট নির্মাণ, ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ১১টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও কম্পিউটার ল্যাব নির্মাণ, ৫৩টি হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ, কোস্টগার্ড স্টেশন, পাসপোর্ট অফিস, জেলা সার্ভার স্টেশন (জেলা নির্বাচন অফিস), আধুনিক ২টি পানি শোধনাগার নির্মাণ, ৩০টি আশ্রয়ন প্রকল্পে ৩ হাজার ৭শ’ ৫০টি ঘর নির্মাণ এবং ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবণ নির্মাণ উল্লেখযোগ্য। এসব হচ্ছে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প। এছাড়া ছোট আকারের অসংখ্য উন্নয়ন কাজ হয়েছে এই দশ বছরে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে। আর চাঁদপুর-হাইমচর সড়কটি আগে খুবই ভয়াবহ অবস্থায় ছিলো। এ সড়কটি এতোটাই সরু ছিলো যে, দু’টি গাড়ি পাশাপাশি চলতে পারতো না। বর্তমান সরকারের সময়ে এ সড়কটি আমূল পরিবর্তন করে অনেক প্রশস্ত করা হয়। এটিও ডাঃ দীপু মনির উল্লেখযোগ্য একটি উন্নয়ন। এই সরকারের প্রথম পাঁচ বছর দীপু মনি মন্ত্রী থাকার সুবাদে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে যেসব উন্নয়ন করেছেন, পরের পাঁচ বছর মন্ত্রী না হয়েও তিনি পূর্বের ন্যায়ই প্রায় সমপরিমাণ উন্নয়ন করেছেন।
এই দশ বছরের উন্নয়ন কর্মকা-কে পুুঁজি করে দীপু মনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী হয়ে পুনরায় মানুষের কাছে ভোটের জন্যে ছুটে চলেছেন। বাস্তবায়িত এসব উন্নয়ন কর্মকা- ছাড়াও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, প্রথম ধাপে ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক নৌ-বন্দর। আর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১০ হাজার একর জমি নিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন। এছাড়া চাঁদপুর শহরকে সৌন্দর্য ও নয়নাভিরাম করতে তাঁর রয়েছে অনেক স্বপ্নের পরিকল্পনা। এই স্বপ্নের চাঁদপুর গড়ার প্রত্যয়ে ডাঃ দীপু মনি ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন, তাঁদের দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছেন।