দখলবাজরা যতই শক্তিশালী হোক একসময় রেলের সম্পদ ছেড়ে দিতে হবে : চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম
চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) জাহাঙ্গীর আলম রেলওয়ে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের দৃষ্টি রাখতে হবে বিনা টিকেটে যেনো কেউ রেলপথে যাত্রী হয়ে যাতায়াত না করে। চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটের আয় কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়টিও আপনাদের দেখতে হবে। রেলওয়ের ইঞ্জিন ও বগি সঙ্কটের কারণে অনেক রুটেই ট্রেন যাতায়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আশাকরি এ সমস্যা অচিরেই সমাধান হয়ে যাবে। রেলওয়ের সম্পদ অবৈধভাবে দখলকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকারি জায়গা কেউ কোনোদিন চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখতে পারে না। দখলবাজরা যতই সন্ত্রাসী ও শক্তিশালী হোক না কেনো একসময় তা ছেড়ে দিতে হবে।
আগামী ২৮ অক্টোবর চাঁদপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের বাৎসরিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে জিআইবিআর উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে রেলওয়ের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের একটি টিম চাঁদপুর রেলপথ-স্টেশন ভবনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন। গতকাল রোববার সকালে এ কর্মকর্তারা লাকসাম থেকে মোটর ট্রলিযোগে যাত্রা করে দুপুরে চাঁদপুর স্টেশন এলাকায় এসে পৌঁছেন। যাত্রাকালে তারা চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উন্নয়ন, স্টেশন ভবনগুলো রি-মডেলিং ও রেলওয়ের ব্রীজগুলোর জন্যে বরাদ্দ দেয়া (চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনির প্রচেষ্টায় প্রাপ্ত বরাদ্দ) ২শ’ ১০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা এ পথের বিভিন্ন দিক নিয়ে ঠিকাদার কর্তৃক কাজ করা বিষয় নিয়ে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেন এবং কাজের বিভিন্ন ত্রুটিগুলো নোট করে নেন। পরিদর্শনকালে ডিআরএম-এর সাথে ছিলেন রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মোঃ মিজানুর রহমান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) ফিরোজ ইফতেখার, বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন) মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডিএসটি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় নিরাপত্তা কমান্ডেন্ট মোঃ আশবাবুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী কুমিল্লা (এইএন) আবরার হোসেন, কুমিল্লা-চাঁদপুরে দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসএসএই (পথ) মোঃ লিয়াকত আলী মজুমদার, কুমিল্লা-চাঁদপুরে দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসএসএই/কার্য রাম নারায়ণ ধরসহ চট্টগ্রাম বিভাগীয় আরো বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
ডিআরএমসহ অন্য কর্মকর্তারা দুপুরে বড়স্টেশন রেলওয়ে অফিসার্স রেস্ট হাউজে এসে অবস্থান করেন। এদিকে তাদের অবস্থানের খবর পেয়ে রেলওয়ে শ্রমিক লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতির মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে চাঁদপুর রেলওয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ডিআরএমসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা চাঁদপুরে তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সমাধানের দাবি তুলে ধরেন।
রেলওয়ে চাঁদপুরস্থ শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে : চাঁদপুরে বসবাসরত রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহের প্রয়োজনে একটি ডিপ টিউবওয়েল বসানো, শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্যে রেলওয়ে হাসপাতালটি পুনরায় চালু করা ও চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রূটে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ছাড়া আরো দুটি আন্তঃনগর ট্রেনের ব্যবস্থা করা। তারা আরো বলেন, বর্ষার সময় চাঁদপুরের ১৪ ও ১০ নম্বর কোয়ার্টারের কর্মকর্তাদের তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে পচা পানিতে থেকে নিদারুণ কষ্টে বসবাস করতে হয়। সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় কোয়ার্টারগুলো বর্ষার সময় পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তাই এ কোয়ার্টারগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা জরুরি। রেলওয়ে ম্যানেজার শ্রমিকদের এসব দাবি শুনে ক্রমান্বয়ে এ সকল কিছুর সমস্যা সমাধান করার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ^স্ত করেন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোঃ জাফর আলম, চাঁদপুর জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ সারওয়ার আলম, রেল শ্রমিক লীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান, আব্দুস সালাম সরকার প্রমুখ।