আওয়ামী লীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষে বহরিয়া বাজার রণক্ষেত্র
দোকান ভাংচুর, পুলিশসহ আহত ১৫ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১১ রাউন্ড গুলি
চাঁদপুর সদরের বহরিয়া বাজারে ওএমএস-এর চাল পাওয়া এবং না পাওয়া নিয়ে গ্রুপিং দ্বন্দ্বের জের ধরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্য তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বহরিয়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলায় ৫টি দোকান, স্থানীয় যুবলীগের অফিস, ইউনিয়ন পরিষদের গেট ভাংচুর ও কোপানো হয়। এতে আহত হয়েছে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে বলে বাজারের লোকজন জানিয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়েছে বলে জানান চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ইব্রাহিম খলিল।
তিনি জানান, এখানে দুই পক্ষের মধ্য এমন মারামারি শুরু হয়েছে, পুলিশ না আসলে লাশ পড়তো। ইউনিয়নের ওএমএস-এর চাল বিতরণ নিয়ে পূর্বের বিরোধ থেকে এ সংঘর্ষ হয়। মারামারির খবর পেয়ে মডেল থানা, পুরাণবাজার ফাঁড়ি ও ডিবি পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ সময় ১১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা দায়ের করেনি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দশ টাকা কেজির চালের বিতরণ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন বেপারী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সিনিয়র নেতা মতিন মাঝির পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব ছিলো। সেই বিরোধ মীমাংসার জন্যে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম খান বেলা এগারটায় দু'পক্ষকে নিয়ে সালিস বৈঠক করেন। এক পর্যায়ে ফয়সাল ও মতিন মাঝির মধ্য তর্ক-বিতর্ক শুরু হলে সেখানে মতিন মাঝিকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার পরপরই সংঘর্ষ বেঁধে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে দু'পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানপাটে হামলা ও ভাংচুর করে। হামলাকারীরা বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও কাচের বোতল নিক্ষেপ করতে থাকে। ফলে বহরিয়া বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সকল দোকানপাট ও যান চলাচল। পুরো বাজারের রাস্তার ওপর কাচের টুকরা ও ইটের স্তূপ জমে যায়।
এ ঘটনায় আহত কজনকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। আহতরা হলো : পুলিশ সদস্য সোহেল ও রেজাউল, সুমন খন্দকার (৩২), রেজ্জাক খাঁ (৬৫), জাকির গাজী (২০), ফরিদ বেপারী (২৯), ইদ্রিছ খান (৩০), ফয়সাল খাঁ (২০), করিম হাওলাদার (৩৫), কবির (২৫), জাহিদ মিজি (১৮), আহাদ (১৬) ও ফজলু বেপারী (৩৫)। আহতের মধ্যে সুমন খন্দকারের অবস্থা গুরুতর বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। হামলার সময় যুবলীগের অফিস, রুবেল, হৃদয়, সেলিম বেপারী, ফিরোজ খানের দোকান ও ছোবহান ডাক্তারের ফার্মেসি ভাংচুর করা হয়।
স্থানীয় সুমন হোটেলের স্বত্বাধিকারী শফিক খান জানান, আমি সালিসে ছিলাম না। কিন্তু আমার দোকান কোপানো হয়েছে। আমার ভাই সুমন খন্দকারকেও মারধর করা হয়েছে।