মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা কমিটি
পাবনায় মুক্তিযোদ্ধার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মুক্তি খাতুনের শরীরে সন্ত্রাসী কর্তৃক পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা কমিটি। একই সাথে নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ চাঁদপুর জেলা কমিটির সভাপতি জাফল ইকবাল মুন্না বলেন, যাদের বীরত্বে ও আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, সে সব বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের এমন অমানবিক ও পৈশাচিক হত্যা কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না। তিনি বলেন, নরপিশাচরা তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে উল্লাস করেছে, আর আমাদের বোন মুক্তি জীবন্ত দ্বগ্ধ হয়ে আত্মচিৎকার করেছে। ৮ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে নরক যন্ত্রণা ভোগ করে সে চির বিদায় নিয়েছে। যা দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আরো একটি বার্তা দিয়ে গেছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এই নারকীয় ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, একটি উন্মুক্ত জলাশয় দখলকে কেন্দ্র করে পাবনায় মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গত ১৯ আগস্ট হামলা চালায়। তখন ওই মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য পুরুষ সদস্য বড়াল নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। পুরুষদের না পেয়ে হামলাকারীরা পাবনা সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেলের মেয়ে মুক্তি খাতুনকে ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ওই মুক্তিযোদ্ধার একটি ঘরেও আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মুক্তির বাবা বাদী হয়ে ৩২ জনকে আসামী করে সাঁথিয়া থানায় মামলা করেছেন। কিন্তু পুলিশ এ পর্যন্ত মাত্র ১৯ জনকে গ্রেফতার করলেও ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামীরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার নিহত কন্যার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কন্যার হত্যাকারী ওইসব নরপিশাচদের শুধু গ্রেফতারই নয়, এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এভাবে জাতীয় বীর এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর অন্যায়ভাবে হাত তোলার সাহস না পায়।