জাবির ভর্তি পরীক্ষায় দুই শিক্ষার্থীর কারাদণ্ড
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় দুই শিক্ষার্থীকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। জাবির ইতিহাসে ভর্তি পরীক্ষায় সর্বপ্রথম কাউকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ড দেয়া হলো। সোমবার রাত পৌনে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের তত্ত্বাবধানে সাভারের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণব কুমার ঘোষ এ দণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল ইসলাম সালমান এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান রাজ্জাক। তাদের দুজনেরই বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা আবদুল আল নোমান (২০) নামে অপরজনের দোষ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণব কুমার ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারা অনুযায়ী দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আটক নোমান নামের আরেকজনের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের (এ ইউনিট) দ্বিতীয় শিফটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সমাজজ্ঞিান অনুষদ ভবনের ৪০৫ নম্বর কক্ষ থেকে কুয়েট শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান রাজ্জাককে আটক করা হয়। সে মেহেদী হাসান নামের এক ভর্তিচ্ছুর ‘প্রক্সি’ হিসেবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পরে রাজ্জাকের দেয়া তথ্যানুযায়ী ভর্তিচ্ছু ও প্রক্সি পরীক্ষার্থীর মধ্যে সমন্বয়কারী জাবি শিক্ষার্থী সালমানকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে থেকে আটক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
কামরুজ্জামান রাজ্জাককে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির ব্যাপারে বলেন, প্রক্সি পরীক্ষা দেয়ার জন্য সালমান আমাকে প্রস্তাব দেয়। এ জন্য সে ২ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিল। অপরদিকে সালমান বলেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সারোয়ার নামে আমার এক বন্ধু পড়াশোনা করে। সারোয়ারের ছোট ভাই মেহেদী হাসানের হয়ে প্রক্সি দেয়ার জন্য আমি রাজ্জাকের সঙ্গে তার (সারোয়ার) যোগাযোগ করিয়ে দেই। বাকি সব কথাবার্তা তাদের মধ্যে হয়েছে। আমি কিছুই জানি না।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়ে জাবির প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, গত বছরের ভর্তি পরীক্ষার সময় জালিয়াত চক্রের কয়েকজনকে আটক ও মামলা করা হলেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। তাই জালিয়াত চক্রের তৎপরতা বন্ধ ও তাৎক্ষণিক বিচার নিশ্চিত করতে এ বছর মোবাইল কোর্ট চালু করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভর্তি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে এ সাজার ঘটনা ঘটলো।