• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক সিট না পাওয়ায় অনুষ্ঠান বন্ধ

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:৩৪ | আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:৫৯
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রিন্ট

বাকৃবির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মাথায় হাত প্রক্টর অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান খোকনের। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সিট না পাওয়ায় অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

রোববার রাতে বাকৃবি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ওই ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকে। ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি।

তবে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের দাবি, মিলনায়তন বহিরাগত দিয়ে ভরা ছিল বলেই শিক্ষার্থীরা কোনো সিট পায়নি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পীরা ও ব্যান্ড দল ‘জলের গানের’ পারফর্ম করার কথা। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান শুরু করে। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর মিলনায়তনের দ্বিতীয় তলায় সিট নিয়ে আশরাফুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। ওই ঘটনার জেরে মিলনায়তনের সামনে ওই হলের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

রাত সোয়া ৮টার দিকে মিলনায়তনে বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সিট না পাওয়ায় তাদের কর্মীরা অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেন। ওই ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

এদিকে অনুষ্ঠানস্থলে হট্টগোল শুরু হলে দর্শণার্থীরা মিলনায়তন ছেড়ে চলে যান। এতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগত অ্যালামনাই ও শিক্ষার্থীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান বন্ধ থাকার সময় সাংস্কৃতিক উপকমিটির দায়িত্বরত শিক্ষক অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম ছাত্রলীগ সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক বরাবর অনুষ্ঠান চালু করার জন্য অনুরোধ জানান।

দেড় ঘণ্টা পরে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মিলনায়তনে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পীদের পারফর্ম বাদ রেখেই ‘জলের গান’- এর পারফর্ম শুরু করা হয়। বারবার অনুরোধ করার পরও অনুষ্ঠান শুরু করতে না পারায় ছাত্রলীগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করে সাংস্কৃতিক কমিটি। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় প্রশাসনের কোনো ভূমিকা পালন করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, অনেক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয় এ রকম একটি আয়োজন করেছিল। সে কারণে শ্রোতারা আগে থেকেই অনুষ্ঠানে এসে জায়গা দখল করে। কিন্তু ছাত্রলীগ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অনেক পরে এসে সিট পায় না। এ কারণেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরনের অনুষ্ঠান করার সাহস করেন না। অনুষ্ঠানে অনেক অতিথি-দর্শক এসেছিলেন, অপ্রীতিকর অবস্থা দেখে তারা অনুষ্ঠান না দেখেই চলে যান।
 
বাকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেল বলেন, মিলনায়তন বহিরাগত দিয়ে ভর্তি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জায়গা পাচ্ছে না। অনুষ্ঠান বন্ধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই দায়ী। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান খোকন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে কারও জন্য সিট বরাদ্দ থাকে না। আর মিলনায়তনে কোনো বহিরাগত ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের বহিরাগত বলে কিনা- তা আমার জানা নাই।