সংসদ ভেঙে নির্বাচনে সেনাবাহিনী চায় জেএসডি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি। এছাড়া বিচারিক ক্ষমতা নিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে দলটি।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানায় দলটি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যান্য কমিশনাররা ছাড়াও ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে দলটির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল ৩টায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি। এ নিয়ে ২৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
মতবিনিময় শেষে আ স ম আবদুর রব সাংবাদিকদের বলেন, কোনো সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কোনো দেশেই সম্ভব হয় না। সে কারণে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সিইসিকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছি। সেই সঙ্গে সন্ত্রাস, মাস্তানি, কালো টাকার ব্যবহার, সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন তথাকথিত পুলিশ দিয়ে রোধ করা সম্ভব হবে না। সেই কারণে বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি।
তিনি বলেন, শুধু রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি ও টহল দেয়ার জন্য সেনাবাহিনী নয়, নির্বাচনী যে কোনো অনিয়ম প্রতিরোধে সেনাবাহিনীকে তাৎক্ষণিক ক্ষমতা দিয়ে মাঠে নামাতে হবে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী যদি জাতীয় যে কোনো দুযোর্গ যেমন বন্যা, ত্রাণ, রাস্তা নির্মাণ ও রোহিঙ্গাদের জন্য মাঠে নামতে পারে তাহলে কেন নির্বাচনে তাদেরকে নামানো হবে না। সবগুলো দল নির্বাচনে সেনাবাহিনী চাচ্ছে অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন সেনা নামাতে চায় না, এর কারণ কী তা সহজেই অনুমেয়।
দলটি মত বিনিময় সভায় ১২টি দফা জানায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনী মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি, না ভোটের ব্যবস্থা করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, নির্বাচনী সকল দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, মন্ত্রী-এমপিরা জনগণের টাকায় যাতে হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে সরকারি যানবাহন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করতে না পার সেজন্য ইসির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া।
এছাড়া ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন না রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে দলটি। নির্বাচনকালীন সরকারেই মেয়াদেই সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা ও উপ-নির্বাচনের বিধান বাতিল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণার বিধান করার দাবি জানায় দলটি।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। এরই ধারবাহিকতায় এই বৈঠক হয়। এখন পর্যন্ত ২০ নিবন্ধিত দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি। ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ১৬ ও ১৭ অগাস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধির সঙ্গে মত বিনিময় করেছে ইসি। ২৪ অগাস্ট থেকে দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু হয়েছে।