• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

গাড়িতে তুলেই ওরা বলে ‘মেয়রগিরি ছুটিয়ে দেব’

প্রকাশ:  ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর মেয়র রুকনুজ্জামানের ধারণা, তাকে অপহরণে জড়িত লোকজন ছিল প্রশিক্ষিত ও পেশাদার। স্থানীয় রাজনীতির বিরোধের জেরে তাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, তাকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার পর অপহরণকারীরা প্রথম যে দুটি বাক্য উচ্চারণ করেছে, তা ছিল ‘বেশি মেয়রগিরি ফলাও? মেয়রগিরি ছুটিয়ে দেব।

মেয়র রুকনুজ্জামান বলেন। তিনি গত ২৫ সেপ্টেম্বর তার উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের বাসার সামনে থেকে অপহৃত হন। দুই দিন পর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নে অপহরণকারীরা তাকে ফেলে যায়।

রুকনুজ্জামান বলেন, সকালে হাঁটতে তিনি পার্কের দিকে যাচ্ছিলেন। পার্কের সামনে কালো রঙের ও কালো কাচের একটি হাইলাক্স মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়িটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুজন লোক জানতে চায় যে তিনি সরিষাবাড়ীর মেয়র কি না। তিনি জবাব দেওয়ার পর চোখের পলকে তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে তুলে ফেলে। গাড়ির ভেতরে বসা ছিল আরও পাঁচজন। তাদের কাউকে তিনি চেনেননি।

রুকনুজ্জামানের ভাষ্য, ওরা এত স্পিডে সব কাজ করেছে যে ভালো ট্রেনিং না থাকলে করতে পারার কথা না।’ তিনি বলেন, গাড়িতে তোলার পর তার চোখ বেঁধে ফেলে ওই লোকজন। এরপর তারা বলে, বেশি মেয়রগিরি ফলাও? মেয়রগিরি ছুটিয়ে দেব। এরপরই তাকে কিছু খাওয়ানো হয়। পরের ঘটনা আর মনে করতে পারছেন না তিনি। ২৭ সেপ্টেম্বর তাকে শ্রীমঙ্গলে ফেলে যায়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি দাবি করেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শরীরে অজ্ঞাত বিষের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাঁর এই দাবি প্রথম আলোর পক্ষে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

ঢাকা মেডিকেলের পর রুকনুজ্জামান রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে বুধবার তিনি  ছাড়া পান। এখনো তিনি ভালোভাবে কথা বলতে পারছেন না। নিরাপদ বোধ করছেন না বলেও জানান। বাসায় ফেরার পর দুই দফায় পুলিশ তাঁকে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলেও জানান তিনি।

মেয়রের দাবি, সক্রিয় রাজনীতি না করেও তিনি এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এবং দুর্নীতি নির্মূলের চেষ্টা করছিলেন। এতে ওই এলাকার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কিছু নেতা বিরক্ত হচ্ছিলেন। টিআর, কাবিখা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়ে অনিয়ম দূর করার চেষ্টা করায় পৌরসভার ১২ কাউন্সিলরের মধ্যে ৭ জন তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে পরপর চারটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ওই চারটি ঘটনা খতিয়ে দেখলে অপহরণের বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তিনি অভিযোগ করেন, অপহরণের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি মহল তাঁর দাম্পত্য জীবনকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।