• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম

কারো একার স্বার্থ উদ্ধারের সংগঠন নয় এটি: মৌসুমী

প্রকাশ:  ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ০২:২৪ | আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ০২:৩০
বিনোদন ডেস্ক
প্রিন্ট

ঢাকাই চলচ্চিত্রের উন্নয়নই মূলমন্ত্র- এমন স্লোগানকে লক্ষ্য বানিয়েই সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী-কলাকুশলীদের নিয়ে নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম’। তবে অনেকেই থাকছেন না এ ফোরামে। কারণ কিছুদিন আগে চলচ্চিত্রের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার মতো এফিডিসিকেন্দ্রিক ১৮ দলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে চলচ্চিত্র পরিবার নামের একটি সংগঠন। 

যে সংগঠনের আহ্বায়ক হচ্ছেন চিত্রনায়ক ফারুক। তাহলে চলচ্চিত্রের উন্নয়নের স্বার্থে এক না হয়ে নতুন এ ফোরাম কেন? শুধুই উন্নয়নের স্বার্থে এ ফোরাম নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে? এমন অনেক প্রশ্নই উঠছে ঢাকাই চলচ্চিত্র দর্শকদের মনে। প্রশ্ন যাই হোক, এ ফোরাম গঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতির ময়দানের মতো চলচ্চিত্রপাড়াতেও শক্তিশালী দুটি দল গঠিত হল। এখন চলচ্চিত্রের উন্নয়ন নাকি একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়ি, আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ করার জন্যই এ বিভক্তি। পরিণাম দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন। সংগঠন কেন হয়? যাতে কাউকে একা লড়তে না হয়। সমাজ বিজ্ঞানীদের সংজ্ঞায়, সমমনা মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য জোটবদ্ধ হতে হয়। যদিও এমনটি ঘটবে কয়েক মাস আগেও কল্পনা ছিল না কারও। কল্পনায় না থাকা সে বিষয়টিই আজ বিশাল হয়ে সামনে এলো চলচ্চিত্র পরিবারের। নতুন ফোরাম আসছে বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। 

গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবারের একের পর এক আপত্তিকর সিদ্ধান্ত চলচ্চিত্রে কাজের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে। বন্ধ হয়ে যায় নতুন ছবির কাজ। ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চলচ্চিত্র শিল্প। শাকিব খানকে নিয়ে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং তার সঙ্গে কোনো কাজ না করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়। দেশের এই শীর্ষ চিত্রনায়ককে ঘিরে যে প্রযোজক ও পরিচালকরা কাজের পরিকল্পনা করছিলেন, হাত গুটিয়ে বসে থাকেন তারা। যারা কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তারা মামলার মুখোমুখি হন। যে শিল্পী ও কলাকুশলীরা শাকিব খান অভিনীত ছবিতে কাজ করেন, তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংগঠন ব্যবস্থা নেয়।

সব মিলিয়ে চলচ্চিত্রের শুটিং প্রায় থেমেই যায়। সেই অবস্থা থেকে চলচ্চিত্রকে রক্ষা করতেই ভাবা হয় নতুন একটি সংগঠনের কথা। এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। চলচ্চিত্র পরিবার নামে যে সংগঠন রয়েছে তারা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করার কথা বলে থাকেন সব সময়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ও বঞ্চিতরা মিলে নতুন শক্তি হয়ে আসছে বিষয়টি নিয়ে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। নতুন সংগঠন হচ্ছে, চলচ্চিত্রের মানুষ বিভাজন হয়ে পড়ছেন- বিষয়টি মীমাংসার জন্য এক পাও হাঁটতে দেখা যায়নি কাউকে। কাজেই যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন কেবল কপাল চাপড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই সামনে। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে এফডিসিতে নতুন অফিসও নিয়ে বসবে নতুন এই ফোরাম। 

নতুন ফোরাম সম্পর্কে শাকিব খান বলেছেন, এখন আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যান একটা কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেটি আমি অনেক বছর দেখিনি। কথা বললেই, পা ফেললেই ব্যান। কিছু বললেই ব্যান! এতগুলো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি, এরপরও কি কথা বলার স্বাধীনতা পাব না? যাদের ব্যান করা হচ্ছে, তারাই কিন্তু চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আসুন আমরা ব্যান কালচার বাদ দিয়ে চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাই। বঙ্গবন্ধুর গড়া চলচ্চিত্রকে সামনে নিয়ে যাই। যারা নিয়মিত কাজ করছেন, তারাই চলচ্চিত্র ফোরামে রয়েছেন। অকাজের লোকরাই অন্যের সমালোচনায় মেতে থাকেন। আমাদের চলচ্চিত্র ফোরামে অকাজের লোক নেই। এ সংগঠনের সবার স্বার্থ রক্ষিত হবে। 

ফোরামের আন্তর্জাতিক সম্পাদক মৌসুমী বলেন, গোটা চলচ্চিত্রের ভালো কিছুর প্রত্যাশায় ফোরাম গঠন করা হয়েছে। এটা কারো একার স্বার্থ উদ্ধারের সংগঠন নয়। আমরা সবাই চলচ্চিত্রের উন্নতি চাই। চলচ্চিত্র বাঁচলে শিল্পীরা বাঁচবে, সিনেমা হল বাঁচবে। আমাদের মধ্যে আগামীতে আর কোনো দলাদলি হবে বলে আমি মনে করি না।

ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কাজী হায়াৎ বলেন, হল মালিকের সঙ্গে চুক্তি থেকে ছবির রিলিজ ডেটও নির্ধারণের কাজ করবে এই সংগঠন। অন্যদের মতো আমরা কাউকে বহিষ্কার করব না। কাউকে মারধর করব না। পাশাপাশি সমগোত্রীয় লোকের ওপর যাতে কেউ চড়াও হতে না পারে, আঘাত করতে না পারে সে জন্যই আলাদা ছাতার নিচে দাঁড়িয়েছি।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক ফারুক। তিনি বলেন, কোনো সংগঠন হচ্ছে কিনা সে বিষয় নিয়ে ভাবছি না। এটা ভাবা আমার কাজও নয়। যারাই চলচ্চিত্রের ভালো চাইবে তাদের সবাইকেই স্বাগত। দল করে পারুক আর মিলেমিশে পারুক চলচ্চিত্রের ভালো করুক। তাতেই আমি খুশি। সংগঠন করার অধিকার সবার আছে। যারা করেছে তাদের ওয়েলকাম। তারা সবাই মিলে যদি চলচ্চিত্রের ভালো কিছু দিতে পারে সেটি আমাদের জন্যই ভালো।

সর্বাধিক পঠিত