কে পাচ্ছেন শান্তির নোবেল?
অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে। আগামীকাল শুক্রবার ঘোষণা করা হবে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে খ্যাত নোবেল শান্তি পুরস্কার। এর আগেই জল্পনা শুরু হয়েছে, কে পাচ্ছেন এই পুরস্কার? এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩১৮ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মনোনীত হয়। এদের মধ্য থেকেই শুক্রবার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে নরওয়ের পার্লামেন্ট নিযুক্ত প্যানেল।
বিজয়ী ছাড়া সকল মনোনীতের নাম গত ৫০ বছর ধরেই গোপন রাখার আনুষ্ঠানিক বিধান রয়েছে। তবে এর মধ্যেও কিছু কিছু নাম সামনে আসে। ব্রিটিশ দ্য গার্ডিয়ানের খবরে এমনই কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য।
পুরস্কারের জন্য নরওয়ের শান্তি গবেষণা ইনস্টিটউট অসলো সাধারণত শর্ট লিস্ট করে দেয়। সেটা গোপন রাখা হলেও জুয়ার বাজারে এরই মধ্যে বেটিং শুরু হয়ে গেছে। সম্ভাব্য নাম ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও, জো কক্স, বুলগেরিয়ার অর্থডক্স চার্চ, ডেভিড বাউয়ির মতো নাম।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও নাম রয়েছে এই তালিকায়। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেইন পলিসি চিফকে ভাবা হচ্ছে শক্ত প্রার্থী হিসেবে। ইরান পারমাণবিক চুক্তিটি বাস্তবায়নের কারণে তাদের হাতে উঠতে পারে নোবেল শান্তি পুরস্কার।
উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে যেন প্রচেষ্টা চালানো হয়, সেজন্য ট্রাম্পকেও দেওয়া হতে পারে পুরস্কারটি! এর আগে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় বসেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও আছেন তালিকায়। তবে তার পাল্লা ততটা ভারি নয় বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স নামে একটি সংগঠনও আছে এ তালিকায়। ছয় বছর ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির যুদ্ধাহতদের সেবাদান, বেসামরিক লোকদের উদ্ধারসহ বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড চালানোর কারণে প্রশংসিত হয়ে আসছিল সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স।
তালিকায় আরও রয়েছে- তুরস্কের একটি সেক্যুলার ঘরানার পত্রিকার সম্পাদক দুন্দার। বর্তমানে জার্মানিতে স্বেচ্ছানির্বাসিত এই সাংবাদিক দেশটির শাসক রিসেপ তাইয়েফ এরদোয়ানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তুরস্কে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্কট নিয়ে আওয়াজ তোলার জন্য তার হাতে পুরস্কার তুলে দিতে পারে পশ্চিমারা।
এবারের তালিকায় জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাও রয়েছে। এছাড়া প্রায় ১০ লাখ অভিবাসী ও শরণার্থীকে আশ্রয় নিয়ে তালিকায় আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল। এখন পর্যন্ত খ্রিস্টান কোনো ধর্মগুরু (পোপ) নোবেল শান্তি পুরস্কার না পেলেও এবার ভাবা হচ্ছে বর্তমান পোপ ফ্রান্সিসের কথা।
দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) নামে সংগঠনটিও রয়েছে তালিকায়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর থেকে তার বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিপক্ষে রাস্তায় নেমেছেন তারা। ট্রাম্পের নেওয়া ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, সামরিক বাহিনীতে তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের না নেওয়ার মতো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন সংগঠনটি।