• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

এসএসসি পাস করেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক!

প্রকাশ:  ০২ অক্টোবর ২০১৭, ২১:১১
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রিন্ট

তার নাম আবদুল করিম। এসএসসি পাস। সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি নিয়েছিলেন। এক বছর পর চাকরি চলে যায়। এবার তিনি তার নাম বদলে রাখেন ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। নামের শেষে লেখেন এমবিবিএস, এফসিপিএস সার্জারি, মেডিসিন, চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ। এই পরিচয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে বেড়ান। হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গতকাল রোববার দিবাগত রাতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ৯ আগস্ট পুঠিয়ায় অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যু হলে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে এই ব্যক্তি পালিয়ে যান। এরপর তার নামে একটি হত্যা মামলা হয়। এরপর থেকে পুলিশ তার পিছু নেয়।

পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তারের পর তার প্রকৃত নাম জানা গেছে। এর আগ পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন ক্লিনিকে অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর নামে অস্ত্রোপচার করতেন। এই আবদুল করিমের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রয়নাচকপাড়া গ্রামে।

রাকিবুল হাসান বলেন, ১৯৮৫ সালে আবদুল করিম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ঠিক এক বছর পরই তার চাকরি চলে যায়। এরপর থেকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা সদরে অবস্থিত একটি ওষুধের দোকানে চাকরি নেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল করিম স্বীকার করেছেন যে ওষুধের দোকানে চাকরির সুবাদে তিনি একসময় নিজেই রোগীকে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেওয়া শুরু করেন। এরপর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসকের সহযোগী হিসেবে কাজ নেন। কিছুদিন পরই তিনি নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। নিজের নাম পরিবর্তন করে ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম ব্যবহার করেন। নামের শেষে চিকিৎসক হিসেবে এমবিবিএস, এফসিপিএস, সার্জারি, মেডিসিন, চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ লেখা শুরু করেন। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে এসব পদবি ভাঙিয়ে তিনি চিকিৎসা দেন ও অস্ত্রোপচার করেন। তার শ্বশুরবাড়ি নাটোর সদরে। তিনি সেই এলাকায় জায়গাজমি কিনে বাড়ি করেছেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সোমবার দুপুরে এই ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আদালতে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়।

পুঠিয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত আল মাহাদী ইসলামী বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় এক প্রসূতির মৃত্যুর পর এই ভুয়া চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মচারীরা লাশ ফেলে পালিয়ে যান। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালের একজন নার্সকে গ্রেপ্তার করেন। এ মামলায় ভুয়া চিকিৎসকসহ চারজনকে আসামি করা হয়।