• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

৭ মে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার দিন

প্রকাশ:  ০৭ মে ২০২১, ১৯:৫৩ | আপডেট : ০৭ মে ২০২১, ২০:০৭
ইউসুফ পাটোয়ারী লিংকন
প্রিন্ট

৭ মে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার দিন

ইউসুফ পাটোয়ারী লিংকন

৭ মে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক অনন্য দিন। দিনটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দ্বিতীয়বার শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ফিরে আসার দিন। প্রথম ফিরে আসার দিন ছিল ১৭ মে ১৯৮১। আর ২০০৭ সালের এদিনে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষিত জরুরি অবস্থা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এর আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু গণতন্ত্রের মানস কন্যা সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশে ফেরার ঘোষণা দেন। নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সারা দেশে এবং বিশ^ব্যাপী। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে তার ঐকান্তিক দৃঢ়তা, সাহস ও গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়। পরবর্তী সময়ে ৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরে এলে লাখো জনতা তাকে সাদর অভ্যর্থনা জানায়। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মিছিল শোভাযাত্রা সহকারে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে নিয়ে আসে। দেশে ফিরে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় শুরু করেন নবতর সংগ্রাম। পুরো বিষয়টা ঘটে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক ধরনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই। কিন্তু লাখো জনতাকে রোখা যায়নি শত প্রচেষ্টায়।
সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ফিরে আসতে না পারলে এদেশে রাজনীতিতে নিষ্ঠুর-নৈরাজ্য বিরাজ করত। অগণতান্ত্রিক সরকার অতীতের মতো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ করে নিত। কিন্তু তারপরও থেকে থাকেনি ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে আসার সময় বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারি নিষেধাজ্ঞা, ষড়যন্ত্র ও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে ২০০৭ সালের ৭ মে ফিরে আসেন প্রিয় স্বদেশে। কিন্তু এর মাত্র দু’মাস পর ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজ বাসভবন সূধাসদন থেকে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় একটি অস্থায়ী কারাগারে তাকে বন্দি করে রাখা হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। গঠিত হয় মহাজোট সরকার। শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও শক্তিশালী ভিত রচিত হওয়ায় জনপ্রিয়তার অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যান। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অবিশ্বাস্য বিজয় লাভ করে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বাধীন সরকার আজ সফলতার সঙ্গে টানা তৃতীয় মেয়াদে চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনা করছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্র তার পিছু ছাড়েনি। বিডিআর হত্যাকাণ্ড, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, হেফাজতের ঘটনাসহ বহু ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনগণের রাজনীতি তথা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের যে আন্দোলন তা রোধ করা সম্ভব হয়নি। সম্ভবও নয়, কারণ জনগণের শক্তির নাম শেখ হাসিনা।


৭ ও ১৭ মে বাংলাদেশ ও বাঙালির কাছে ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীদের ঢেলে দেওয়া ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর চরম এক প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত প্রবাসী জীবন কাটাতে হয় আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তার বিদেশে থাকাকালেই ১৯৮১ সালে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগ নেতারা শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করেন। দেশে প্রত্যাবর্তনের পর নেতারা তার হাতে তুলে দেন দেশের সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যের সাফল্যগাথা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পতাকা। এরপর থেকে শেখ হাসিনা দলীয় কাউন্সিলে বারবার নির্বাচিত হয়ে দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এবারসহ চারবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
হয়েছেন তিনি।
আজ সেই বঙ্গবন্ধুকন্যার ফিরে আসার দিনে আমাদের প্রার্থনা শতায়ু হোন বঙ্গবন্ধুকন্যা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যাশা জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে হবে। নির্মাণ করতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দুর্নীতিমুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাশীল আধুনিক বাংলাদেশ।

সর্বাধিক পঠিত