• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

বাগেরহাটে শায়িত হবেন ফাদার রিগন, মরদেহ আসছে আজ

প্রকাশ:  ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০৪ | আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১০:৩৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাদার রিগন
প্রিন্ট

মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ পাওয়া ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জনকারী ইতালির খ্রিস্ট ধর্মযাজক ফাদার মারিনো রিগনের মরদেহ আজ রোবাবর ইতালি থেকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে বাগেরহাটে সমাধিস্থ করা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদান রাখাসহ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিবেদিত এই মহান ব্যক্তি ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ইতালিতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশ সরকার ফাদার মারিনো রিগনের শেষ ইচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে তার দেহাবশেষ বাংলাদেশের মাটিতে তারই স্থাপিত বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার শেলাবুনিয়া চার্চের পাশে সমাধিস্থ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে।

ফাদার মারিনো রিগন ১৯২৫ সালের ৫ ফ্রেব্রুয়ারি ইতালির ভেনিসের অদূরে ভিন্নাভেরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্ট ধর্মযাজক হিসেবে তিনি ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে অবশেষে তিনি মংলার শেলাবুনিয়া গ্রামে একটি চার্চ ও একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ওই গ্রামে স্থায়ী আবাসও গড়ে তুলেছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ছিল তার অকুণ্ঠ সমর্থন। যুদ্ধ চলাকালীন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য নিজের প্রতিষ্ঠিত চার্চে গোপনে একটি চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন। তার এই ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা নিয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা সুস্থ হয়ে পুনরায় রণাঙ্গনে ফিরে গেছেন। তাদের মধ্যে বিখ্যাত হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমও ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে ফাদার মারিনো রিগনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে এবং ২০১২ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করে।

বাংলাদেশে বসবাসের পর থেকে তিনি বাংলা ভাষা শিখতে শুরু করেন এবং বাংলা সাহিত্যের প্রতি তার কৌতূহল ও নিবিড় ভালোবাসার জন্ম হয়।

তিনি রবীন্দ্রনাথের রচনাবলি, লালনের সংগীত ও দর্শনের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। তার মাধ্যমে ইতালিয়ান ভাষায় অনূদিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলিসহ প্রায় ৪০টি কাব্যগ্রন্থ, জসীম উদ্দীনের নকশীকাঁথার মাঠ ও অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ, লালনের গানসহ অসংখ্য সাহিত্যকর্ম।

বাংলাদেশের এই অকৃত্রিম বন্ধুর শেষ ইচ্ছা পূরণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের মহিমাকে সমুজ্জ্বল রাখার আরো একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।

 

সূত্র : রাইজিংবিডি ডট কম।

সর্বাধিক পঠিত