• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ঝালকাঠির নলছিটিতে কবর থেকে লাশ চুরি, জনমনে আতঙ্ক

প্রকাশ:  ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১৭:৪৯
ঝালকাঠি সংবাদদাতা
প্রিন্ট

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় কবর থেকে লাশ চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে কবর থেকে লাশ তুলে হাড়গুলো নিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় অনেকেই আতঙ্কিত। খবর ছড়িয়ে পড়ায় রাত জেগে কবর পাহারা দিচ্ছে মৃতের স্বজনরা।

সূত্র জানায়, নলছিটির কুশঙ্গল ইউনিয়নের জামুড়া, মাদারঘোনা ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে সম্প্রতি বয়োজ্যেষ্ঠ এক নারীসহ পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের দাফন করা হয়। তাদের মধ্যে জামুড়া গ্রামের মুজাহার হাওলাদার, মাদারঘোনা গ্রামের বেলাতুন্নেছা বেগম ও লিয়াকত আলী খানের মৃত্যুর এক থেকে ছয় মাসের মধ্যে রাতে কবর খুঁড়ে লাশ তুলে হাড়গুলো নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। লাশে এক ধরনের ওষুধ (মেডিসিন) দিয়ে মাংস ছাড়িয়ে হাড়গুলো নিয়ে যায় তারা। অন্য দুটি কবর খোঁড়ার শব্দ পেয়ে স্বজনরা বের হলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। কী কারণে কঙ্কাল চুরি হচ্ছে, তা জানে না মৃত ব্যক্তির স্বজনরা। এসব গ্রামে সদ্য মৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা রাত জেগে কবর পাহারা দিচ্ছে। এ দুর্বৃত্তচক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মৃতের ক্ষুব্ধ স্বজনরা।

জামুড়া গ্রামের মৃত মুজাহার হাওলাদারের ছেলে মাসুম হাওলাদার বলেন, ছয় মাস আগে আমার বাবা মারা যান। তার মৃত্যুর ২২ দিন পর সকালে কবরস্থানে গিয়ে মাটি খোঁড়া ও লাশের মাংস পড়ে থাকতে দেখি। রাতে কবর থেকে মৃতদেহ তুলে মেডিসিন দিয়ে হাড়গুলো নিয়ে গেছে দৃর্বুত্তরা। বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। একটি সংঘবদ্ধচক্র এই অপকর্ম করছে। এভাবে অনেকেরই লাশ দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে। যারা এমন অমানবিক কাজ করে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

মাদারঘোনা গ্রামের মৃত বেলাতুনেচ্ছার মেয়ে নূরজাহান বেগম বলেন, আমার মায়ের লাশ চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আমরা লোকলজ্জায় কাউকে বিষয়টি জানাতে পারিনি। মায়ের লাশ চুরি হওয়ার কিছুদিন পর পার্শ্ববর্তী লিয়াকত আলী খানের লাশও চুরি হয়। আমরা পরিবারগুলো আতঙ্কে আছি।

জামুড়া গ্রামের চান মিয়া হাওলাদারের ছেলে নাসির উদ্দিন বলেন, আমার বাবা গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। তাকে বাড়ির পাশেই দাফন করা হয়। প্রতিবেশী কয়েকজনের লাশ চুরি হওয়ায় আমরা রাতে ঘুমাতে পারি না। রাত জেগে কবর পাহারা দিচ্ছি। এভাবে কত দিন দেব! আমরা গ্রামের বাড়িতে থাকি না। ঢাকায় চাকরি করি। বাড়ি থেকে চলে গেলে লাশ চুরি হয়ে যেতে পারে। পরিবারের সবাই বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত।

কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে এমন তিন-চারটি ঘটনা শুনেছি। আমার মনে হয়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র লাশগুলো চুরি করছে। আমি ওয়ার্ড সদস্যদের (মেম্বার) বিষয়টি নজরদারি করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। কাউকে ধরতে পারলে চক্রটির সন্ধান পাওয়া যাবে।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, এমন অমানবিক ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।