• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

বজ্রপাতে একদিনে প্রাণ গেল ৬ জনের

প্রকাশ:  ০৫ মে ২০২১, ১১:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বজ্রপাতে একদিনে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে এক নারী, ভোলার চরফ্যাশনে এক কৃষক ও এক নারী, নোয়াখালীর হাতিয়ায় এক জেলে, ফেনী শহরে এক কিশোর ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ মে) সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

হবিগঞ্জ

বিকেল ৫টার দিকে হবিগঞ্জের বানিয়াচং হাওরে বজ্রপাতে লক্ষী সরকার (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের মৃত্যু জ‍্যুতিষ সরকারের স্ত্রী।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন বলেন, ‘শুনেছি বজ্রপাতে হাওরে এক নারী মারা গেছেন।’

বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, ‘লক্ষী সরকার নামে এক নারী বজ্রপাতে মারা গেছেন। তার পরিবারকে সরকারি সহায়তা ১০ হাজার টাকা দেয়া হবে।’

ভোলা

মঙ্গলবার দুপুরে জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় বজ্রপাতে এক কৃষক ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের রসুলপুর গ্রামের রুস্তম আলী হাওলাদারের ছেলে মো. আব্দুল হালিম হাওলাদার (৩৭) ও একই উপজেলার দুলালহাট থানার আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবু কালামের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা (৬০)।

স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে আব্দুল হালিম হাওলাদার লোকজনের সঙ্গে জমির ধান কাটেন। দুপুরের দিকে বৃষ্টি শুরু হলে তিনি কাটা ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ফজিলাতুন্নেছা তার পালিত হাঁস খুঁজতে নদীর পাড়ে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম ও দুলাল হাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

নোয়াখালী

দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে বজ্রপাতে মোবারক হোসেন (২২) নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই জেলে।

মৃত মোবারক হোসেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইসমাইলের ছেলে। আহত মো. ইরাক (১৭) ও ইলিয়াসের (২৬) বাড়ি নিঝুমদ্বীপের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় জেলেরা স্থানীয়ভাবে তৈরি ঠেলাজাল দিয়ে মাছ শিকার করতে নদীতে যান। তারা নিঝুমদ্বীপের পশ্চিম পাশে মেঘনা নদীর তীরে অবস্থান করা অবস্থায় বজ্রপাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ সময় ঘটনাস্থলেই জেলে মোবারক মারা যান। বাকি দুজন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান। আহত দুজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

নিঝুমদ্বীপ ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খবির উদ্দিন বলেন, মৃত জেলে মোবারক হোসেনের মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ফেনী

দুপুর ১ টার দিকে ফেনী শহরতলীর উত্তর সহদেবপুর এলাকায় আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে সঞ্জীব দাস (১৪) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সে ফেনী শহরের মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

মৃত কিশোরের বাবা ফার্নিচার মিস্ত্রি পরিমল দাস জানান, দুপুরের দিকে হালকা বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হলে তার ছেলে সঞ্জীব বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যায়। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তার ছেলে মাটিতে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, উত্তর সহদেবপুর বজ্রপাতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। বিস্তারিত জানার জন্য পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

সুনামগঞ্জ

সকালে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দেখার হাওরে বজ্রপাতে মো. আব্দুল বারী (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের নতুন নগর গ্রামের মৃত মফিজ আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে কৃষক আব্দুল বারী তার পালিত গরুগুলোকে বাড়ির পাশে দেখার হাওরে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। পরে হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতের কবলে পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ নাজির আলম বলেন, লিখিত আবেদেনের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ মৃতের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।