• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

রাজধানীতে করোনা আতঙ্কে বেড়েছে মাস্ক ব্যবহার

প্রকাশ:  ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

সকাল সাড়ে ৯টা, রাজধানীর নিউমার্কেটের সামনে রাস্তা দিয়ে দলবেঁধে ছুটছেন অসংখ্য কর্মব্যস্ত মানুষ। কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায় আবার কেউবা মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছেন গন্তব্যে। তাদের অধিকাংশই নিউমার্কেটসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার দোকান মালিক ও কর্মচারী। তাদের প্রায় সবার মুখেই ছিল মাস্ক। যে স্বল্পসংখ্যক মানুষের কাছে মাস্ক ছিল না, তারাও ফুটপাতের দোকান থেকে ১০টাকায় চারটি সার্জিক্যাল মাস্ক কিনে তবেই মার্কেটে ঢুকছেন। মার্কেটের ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই যাতে মাস্ক পরে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষেরও রয়েছে নজরদারি। গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীরা মাস্ক ছাড়া কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছিলেন না।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) দেখা গেছে এমন চিত্র। শুধু মার্কেটই নয়, জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে যারা সকাল সকাল বাইরে বের হয়েছেন তাদের সিংহভাগের মুখেই ছিল মাস্ক।

রোগতত্ত্ব ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্কই হলো ‘সর্বোৎকৃষ্ট ভ্যাকসিন’। তাই বাইরে বের হলে তারা সার্বক্ষণিক মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সে অনুযায়ী মাস্কের ব্যবহার আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। এছাড়া, সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। ফলে ভয় থেকেও কিছুটা সচেতনতা এসেছে মানুষের মধ্যে।

জনমনে আতঙ্ক দূর করতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমে ঘরের বাইরে বের হলে সার্বক্ষণিক যথাযথভাবে মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বার বার প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর সুফলও মিলেছে। বহুগুণে বেড়েছে জনসচেতনতা। এছাড়া, গত তিন সপ্তাহ ধরে চলমান লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকা এবং মানুষ বাইরে কম বের হওয়ায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মঙ্গলবার (২৭এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে আয়োজিত করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কিত এক প্রেস ব্রিফিংয়েও রাজধানীতে মাস্কের ব্যবহার আগের তুলনায় বহুলাংশে বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী বলেন, জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে ঈদকে সামনে রেখে সরকার মার্কেট ও শপিং মল খুলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘লকডাউন দীর্ঘমেয়াদী কোনো সমাধান নয়। তাছাড়া করোনার সংক্রমণ রোধে টিকা কার্যকর হলেও একমাত্র উপায় নয়। এ মুহূর্তে টিকার সঙ্কট রয়েছে। ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরা এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এখন সর্বোৎকৃষ্ট উপায়।‘

চলমান লকডাউনের মধ্যেই গত ২৪এপ্রিল থেকে মার্কেট ও শপিং মল খুলে দেয়ার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। সরকারি নির্দেশনায় আগামী ৫ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। তবে বাস্তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকা ছাড়া লকডাউন কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

এদিকে, দেশে চলমান টিকাদান কর্মসূচিও কিছুটা থমকে গেছে। সরকার দেশীয় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার টাকা দিলেও এখনও টিকা বুঝে পায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোশতাক হোসেন বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে মাস্ক পরা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, ঘন ঘন স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণ এড়ানো যাবে।‘

‘শুধুমাত্র টিকাই করোনা প্রতিরোধের একমাত্র উপায় নয়। মাস্কের সঠিক ব্যবহার সর্বোৎকৃষ্ট টিকাস্বরূপ’, বলেন তিনি।

সর্বাধিক পঠিত