• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

৭নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ ও বেশ ক’টি উঠোন বৈঠককালে মেয়র প্রার্থী জুয়েল

আমি নির্বাচিত হলে বড় স্টেশন এলাকাকে নান্দনিক পর্যটন স্পটে রূপান্তর করতে কাজ করবো

প্রকাশ:  ০৩ অক্টোবর ২০২০, ১০:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 আগামী ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের   মেয়র প্রার্থী অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল গতকাল শুক্রবার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে সকাল ৯টা থেকে ব্যাপক গণসংযোগ ও বেশ কটি উঠোন বৈঠক করেন।
এসব উঠোন বৈঠক ও গণসংযোগকালে জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, আমি আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী, আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি যেহেতু রাজনীতি করি, সেই কারণে দলের প্রতীক নৌকা নিয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। আগামী ১০ অক্টোবর আপনারা সশরীরে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আপনাদের গোপন রায়ের ভিত্তিতে আমাকে আপনাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করলে আমি আগামী ৫টি বছর আপনাদের সেবা দেয়ার জন্যে সেবক হয়ে, আপনাদের উন্নয়নে কাজ করবো।
তিনি বলেন, চাঁদপুর পৌরসভাটি ১২৫ বছরে পা দিয়েছে। এ পৌরসভাটি একটি ঐতিহ্যবাহী এবং এর সুনাম রয়েছে। আমি আজ যে স্থানে দাঁড়িয়ে আপনাদের উদ্দেশ্যে কথা বলছি, এ এলাকাটির এক সময়ে বেশ জৌলুস ছিলো। সেটি নিশ্চয়ই আপনাদের জানা রয়েছে। এ বড়স্টেশন বা এ ট্রেন স্টেশনটি ব্রিটিশ শাসনামলে আসাম বেঙ্গলসহ যোগাযোগের এক বিশাল ট্রানজিট ছিলো। সাথে রকেটঘাট ও লঞ্চঘাটসহ জমজমাট অবস্থা ছিলো। শুধুমাত্র মেঘনার ভাঙ্গনে আজ এ এলাকাটি সেই জৌলুস হারিয়েছে, নেই জমজমাট অবস্থান। আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে আজ কথা দিয়ে যাচ্ছি, আপনারা আগামী ১০ অক্টোবর শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে আমাকে বিজয়ী করলে ইনশাআল্লাহ বড়স্টেশন এলাকাটি মেঘনার ভাঙ্গন রোধকল্পে পরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
তিনি আরো বলেন, পুরো ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বা এ ওয়ার্ডের জনগণ হিসেবে আপনাদের একদিকে মেঘনার ভাঙ্গন, অন্যদিকে রেল কর্তৃপক্ষের হয়রানির শিকার হতে হয়। আপনাদের সকলের জানা রয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেল কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পত্তি উদ্ধারে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও উচ্ছেদ অভিযান চালানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ খবরটি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি কোনো মাধ্যমে জেনে তিনি তাৎক্ষণিক রেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন এ আমার নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চালানো যাবে না। কারণ, তারা নদীসিকস্তি। তাদের বসবাসের কোনো স্থান নেই। তাই আপনাদের কাছে আমার আবেদন, আগামী ১০ অক্টোবর আপনারা শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকা, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির প্রতীক নৌকা, আমার প্রতীক নৌকা মার্কায় আপনাদের মহামূল্যবান ভোটটি দিয়ে নির্বাচিত করলে আমি আপনাদের এ বাসস্থানের জায়গাটির বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে সমাধান করবো ইনশাআল্লাহ্।
তাছাড়া এ এলাকাটি এ পৌরসভার অনেক পুরানো ওয়ার্ড হলেও মনে হয় সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। এ এলাকার গ্যাস, বিদ্যুৎ, রাস্তা ও ড্রেনেজ সমস্যাগুলোর বিষয়েও আমি সমাধান করবো।
তিনি ওয়ার্ডবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা হয়তো ভাবছেন নির্বাচন আসলে প্রার্থীরা এসে কথা দিয়ে যায়, বিজয়ী হয়ে আর খবর নেয় না। কিন্তু আমি জুয়েল ঐ ব্যক্তি নই। ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন, আমি যা পারি তা বলি। যা পারবো না, তা কখনো বলার চেষ্টা করি না বা আশ^াস দেই না। আপনাদেরকে আমার এই আশ^াস এবং কথা বলার মূল শক্তি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ, আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের হাতে এ দলের মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনিই আমার মূল শক্তি। এরপর রয়েছে আপনাদের প্রিয় নেত্রী যাঁকে আপনারা পর পর ৩বার বিজয়ী করে সংসদে পাঠিয়েছেন। তিনি হচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। অতএব আপনারা আমাকে আগামী ১০ অক্টোবর নৌকা প্রতীকে মেয়র পদে বিজয়ী করুন। আমি আপনাদের দেয়া সকল কথা অক্ষরে অক্ষরে পূরণ করবো।
তিনি আরো বলেন, আপনারা কোনো গুজবে কান দিবেন না। ভোট কেন্দ্র্রে আপনাকে যেতে হবে। আপনার ভোট আপনি দিতে হবে। সরকার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। অতএব আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হলে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের যারা ভোটার রয়েছে তাদের নিয়ে কেন্দ্রে যেতে হবে। আপনাদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতিই নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবে।
তিনি ৭নং ওয়ার্ডে মাদকের বিস্তার প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সরকার মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স এবং আমি মেয়র নির্বাচিত হলে চাঁদপুর পৌর এলাকাকে সম্পূর্ণভাবে মাদকমুক্ত করবো।
জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, অপার সম্ভাবনার শহর এ চাঁদপুরকে আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নান্দনিক পর্যটন নগরীতে রূপান্তর করতে কাজ করবো।
তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, মেয়র পদে কেউ কেউ আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসেন। তাদের কাছে জানবেন, বৈশি^ক এ মহামারী করোনার সময় তারা কোথায় ছিলো। আপনাদের পাশে কী তারা দাঁড়িয়েছে? কিন্তু আমি করোনা পরিস্থিতিতে আমার গড়া সংগঠন কিউআরসির মাধ্যমে এ পৌর এলাকায়  প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। কাজ করার জন্যে মন লাগে। মৃতদের দাফন, দাহ বা সৎকার করেছে কিউআরসি, অসুস্থদের গাড়ি করে ডাক্তারের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। ডাক্তারদের তালিকা এবং মোবাইল নাম্বার দিয়ে পৌরবাসীকে চিকিৎসা নেয়ার ব্যবস্থা করেছি। এমনকি ঔষধ পর্যন্ত ক্রয় করে দিয়েছি।
জিল্লুর রহমান জুয়েল গতকাল ২ অক্টোবর শুক্রবার সকাল থেকে পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠকগুলোতে উল্লেখিত কথাগুলো বলেন।
এ সকল উঠোন বৈঠক ও গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মাসুদ আলম মিল্টন, সদস্য দেলোয়ার সরকার, চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, রাজরাজেশ^র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হযরত আলী বেপারী, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ফরিদা ইলিয়াস, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সফিকুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আঃ রহিম গাজী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাঃ জুয়েল, যুবলীগ নেতা মোঃ ইকবাল বেপারী, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী  নূরজাহান বেগম লিপি, সেলিম মোল্লা, ওয়ার্ড ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আকাশ প্রমুখ।
জিল্লুর রহমান জুয়েল টিলাবাড়ি, যমুনা রোড বালুর মাঠ, ক্লাব রোড মাহবুব টিটির বাড়ি, মাদ্রাসা রোড প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ, লঞ্চ ঘাট, নিশি বিল্ডিং, কাঁচা কলোনী, বৌ বাজার, জামতলা, মসজিদ মাঠ, কয়লা ঘাট ও মাছ ঘাটে উঠোন বৈঠকে বক্তব্য রাখেন। তিনি এ ৭নং ওয়ার্ডে ৬টি উঠোন বৈঠক করেন।

সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ