• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

১৫ মিনিটে করোনা শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন এমআইটির গবেষকদের

প্রকাশ:  ২২ এপ্রিল ২০২০, ১৯:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংক্রমণের শিকার ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সুখবর দিলেন টাটার অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা। মাত্র ১৫ মিনিটে করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে সক্ষম, এমন কিট উদ্ভাবন করেছেন ই২৫বায়ো নামের প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তারা।

তাঁদের দাবি, তাঁরা যে অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট তৈরি করেছেন, তা প্রচলিত অন্য পদ্ধতির চেয়ে অনেক কম সময়ে কেউ কোভিড-১৯ সংক্রমণের শিকার হয়েছেন কি না, তা বলে দিতে পারবে। বর্তমান করোনা মহামারি অবস্থা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেতে এ কিট সহায়ক হতে পারে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক ই২৫বায়ো নামের প্রতিষ্ঠানটি পরীক্ষা উপযোগী কিট তৈরিতে আগে থেকে পরিচিত। এর আগে ডেঙ্গু ও জিকা পরীক্ষার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিল তারা। এটি এমআইটি টাটা সেন্টারে যাত্রা শুরু করেছিল এবং শুরুর দিকে এতে অর্থায়ন করেছিল টাটা সেন্টার ফর টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইন।

এমআইটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে ই২৫বায়ো প্রতিষ্ঠানটি কোভিড-১৯ ডায়াগনস্টিক কিট উদ্ভাবনের জেন্য খোশলা ভেঞ্চারসের কাছ থেকে ২০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থায়ন পেয়েছে। দুই বছর বয়সী প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত মানুষের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে এবং এক মাসের মধ্যেই কিট তৈরি করে ফেলেছে।

ই২৫বায়োর প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা (সিটিও) আইরিন বোস বলেন, ‘টাটা সেন্টার ও টাটা ট্রাস্ট আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছিল এবং অন্য সবার আগে প্রাথমিক গবেষণায় অর্থায়ন করেছিল। আমাদের উৎপাদন সহযোগী ভারতের হাই মিডিয়া লিডিং বায়োসায়েন্স কোম্পানিসহ সবাইকে ধন্যবাদ।’

আইরিন বলেন, তাঁদের পরীক্ষাটি অনেকটাই প্রেগিনেন্সি টেস্টের মতো। তবে এ ক্ষেত্রে নাসোফেরেঞ্জিয়াল সোয়াব প্রয়োজন হবে। বর্তমানে তাঁদের গবেষকেরা এ সোয়াবের পরিবর্তে অন্য কোনো নমুনা যেমন লালা ব্যবহার করা যায় কি না, তা পরীক্ষা করছেন। এতে রোগীর অস্বস্তি কমবে। তিনি আরও দাবি করেন, অন্যান্য বিকল্প পরীক্ষার চেয়ে এ পদ্ধতি অনেক সাশ্রয়ী হবে।

এমআইটির গবেষকেরা বলেন, ভাইরাস যে হারে ছড়াচ্ছে, তাতে দ্রুত, নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী ও সহজে ব্যবহার উপযোগী টেস্ট দরকার। এতে সংক্রমণের হার কমানো যাবে। দ্রুত শনাক্ত করে রোগীকে পৃথক করা গেলে সংক্রমণ কমবে।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দ্রুত ও সস্তার পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সময়মতো কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি আকাশপথে পরিবহনের মতো ব্যবসা খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে। এখন দুবাই ভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইনস যাত্রীদের কোভিড-১৯ শনাক্ত করতে রক্ত পরীক্ষা করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওষুধ বা ভ্যাকসিন তৈরি না হচ্ছে, তত দিন এটাই চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এয়ারলাইনসের তথ্য অনুযায়ী, যাত্রীকে চেক ইন এরিয়ায় পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং ১০ মিনিটে ফল জেনে তারপর তাদের নেওয়া হচ্ছে।

ই২৫বায়ো ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যভিত্তিক কিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে, যাদের প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন কিট তৈরির সক্ষমতা রয়েছে।

ই২৫বায়োর অন্যতম উদ্যোক্তা লি ঘারকি বলেন, ‘এ টেস্ট কিট উৎপাদনের জন্য যে পরিবেশ লাগে, তা অনন্য। তাই আমরা কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে এটি সীমাবদ্ধ রাখিনি। সঠিক সুবিধাযুক্ত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সহযোগী করা হয়েছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। স্থানীয় হাসপাতাল যেমন মাস জেনারেল, বেথ ইসরায়েল ও টাফটসের গবেষকেরাও আমাদের পণ্য নিয়ে গবেষণা করছেন।’