• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রোগীর কাছ থেকে ৫শ’ টাকা ভিজিট নেয়ায় ব্যাপক উত্তেজনা ও হাতাহাতি ॥ আহত ৫

প্রকাশ:  ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে বসে রোগী দেখে রোগীর কাছ থেকে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অর্থ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ডাক্তার, তার দপ্তরের অ্যাটেনডেন্ট এবং অবস্থানরত দালালদের সাথে রোগীর আত্মীয়-স্বজনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে অবৈধভাবে অর্থ নেয়া হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোঃ হাসানুর রহমান ভিজিটের ৫শ’ টাকা ফেরৎ দিয়ে হাসপাতাল থেকে কেটে পড়েন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার দুপুরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ২য় তলায় ডাঃ হাসানুর রহমানের কক্ষে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আহতরা হলো : শাওন শেখ, মিলন ভূঁইয়া, হারুনুর রহমান, দালাল মিনু ও টিটু হোসেন ভূঁইয়া।
জানা গেছে, হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোঃ হাসানুর রহমান চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে বসে হারুনুর রহমান (৫৫) নামে এক রোগীর চিকিৎসাপত্র দেয়ার পর ৫শ’ টাকা ভিজিট নেন। তিনি শুধু ভিজিট নিয়েই ক্ষান্ত হননি, হাসপাতাল লাগোয়া একটি প্যাথলজিতে গিয়ে রোগীকে কয়েকটি টেস্ট করাতে বলেন। এই প্যাথলজিতে পরীক্ষা করাতে চার্জ আসে ১ হাজার ৭শ’ টাকা। রোগীর পক্ষে এতো টাকা পরিশোধ করা কষ্টকর হওয়ায় তিনি এলাকার পরিচিতজনদের ও আত্মীয়স্বজনদের খবর দেন। পরিচিত ও আত্মীয়রা হাসপাতালে এসে ডাঃ মোঃ হাসানুর রহমানের কাছ থেকে ভিজিট দেয়া ৫শ’ টাকা চাওয়ায় ডাক্তারের সাথে ব্যাপক বাগ্বিত-ার সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে ব্যাপক উত্তেজনা হয়। তখন ডাক্তার, তার দপ্তরের অ্যাটেনডেন্ট ও অবস্থানরত দালালদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রোগীর লোকেরা চাপ প্রয়োগ করলে অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে ডাঃ হাসানুর রহমান ভিজিটের ৫শ’ টাকা ফেরৎ দিয়ে হাসপাতাল থেকে কেটে পড়েন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রোগী শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হারুনুর রহমান (৫৫) গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এক দালাল আমাকে হাসান ডাক্তারে কাছে নিয়ে আসে। তিনি আমাকে দেখার পর কাগজে বিভিন্ন ওষুধ ও টেস্টের কথা লিখে বলে ৫শ’ টাকা ভিজিট দিয়ে যান। তখন আমি বলি কিছু কম নেয়া যায় না। ডাক্তার বলেন, ভিজিট ৫শ’ টাকা আর টেস্টগুলো ওই প্যাথলজিতে গিয়ে করে নিয়ে আসুন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের বক্তব্য নেয়ার জন্যে তাঁর অফিসে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে অফিস কর্তৃপক্ষ জানান।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আরএমও ডাঃ এএইচএম সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, সরকারি হাসপাতালে বসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা যায় না। এটা অপরাধ। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ডাঃ হাসানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ২টায় কর্নফুলি হাসপাতালে যাচ্ছি, আপনারা সেখানে আসুন। সেখানে গিয়ে অনেক সময় বসার পর উনি না আসায় ফোন করা হলে তিনি বলেন, অনেক রোগী হাসপাতালে আসে, কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছি কি না তা আমার মনে নেই। একটু পরে আবার বলেন, না কোনো রোগীর কাছ থেকে আমি ভিজিট নেইনি।
উল্লেখ্য, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোঃ হাসানুর রহমানের বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন রোগী অভিযোগ করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমের কাছে। এ ডাক্তারের রুমের সামনে সবসময় দালালদের আনাগোনা চোখে পড়ে এবং তিনি সবসময় সরকারি হাসপাতালে বসে রোগীর কাছ থেকে টাকা নেন এবং বিভিন্ন টেস্ট করাতে তার পছন্দের প্যাথলজিতে পাঠান।

 

সর্বাধিক পঠিত