• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ভারতে কমছে ভোজ্যতেলের দাম, বাংলাদেশে কমবে কবে?

প্রকাশ:  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

দুর্গাপূজা সামনে রেখে ভারতের জনগণকে কিছুটা স্বস্তির খবর শোনালো দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। করোনার ভেতর বছরখানেক ধরে বেড়ে চলা ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। পাম, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের আমদানি শুল্কে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে ভারত সরকার। এর ফলে দেশটির খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমে আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপরিশোধিত পাম তেলের মূল আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। একইভাবে, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও সূর্যমুখী তেলের মূল আমদানি শুল্ক ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর পরিশোধিত পাম, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের মূল আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা আগে ছিল ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

ছাড়ের পর ভারতে অপরিশোধিত পাম, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল আমদানিতে মোট শুল্ক দিতে হবে ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যার মধ্যে ২ দশমিক ৫ শতাংশ মূল আমদানি শুল্ক এবং অন্যান্য কর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বিপরীতে পরিশোধিত পাম, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল আমদানিতে মোট শুল্ক দিতে হবে ৩৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত শনিবার থেকেই কার্যকর হয়েছে নতুন এ শুল্কহার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমদানি শুল্ক কমে যাওয়ায় ভারতের খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি চার থেকে পাঁচ রুপি কমতে পারে। তবে এ সিদ্ধান্তের কারণে আনুমানিক ১১শ কোটি রুপির রাজস্ব ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোজ্যতেল আমদানিকারক ভারত। দেশটি অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশই পূরণ করে আমদানির মাধ্যমে। ফলে ভারতে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণে আন্তর্জাতিক বাজারে দামের হ্রাস-বৃদ্ধি একটি বড় ভূমিকা পালন করে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরানুসারে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতে লাগাতার ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব বলছে, সেখানে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে অন্তত ৬০ শতাংশ। এক বছর আগে যেখানে ভারতের বাজারে এক লিটার সরিষা তেলের দাম ছিল গড়ে ১২০ রুপি, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০-এ। তবে এবার আমদানি শুল্ক কমায় ভারতে ভোজ্যতেলেরও দামও কিছুটা কমবে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, ভারতের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার আশা জাগায় প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশে কবে কমবে? সম্প্রতি দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম গত এক দশকের রেকর্ড ভেঙেছে। এর মধ্যেই গত ৫ সেপ্টেম্বর সরকার ঘোষণা দেয়, সয়াবিন তেলের দামে লিটারপ্রতি চার টাকা ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে ১৫৩ টাকা গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

এর আগে, গত ৩০ জুন সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি চার টাকা কমানোর কথা জানিয়েছিল ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে গত ৫ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জানানো হয়, এখন থেকে পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল ৭২৮ টাকা এবং এক লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৯ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। আর পাম তেলের দাম হবে লিটারপ্রতি ১১৬ টাকা।

দেশে এভাবে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। গত মাসেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা।