• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

শাহরাস্তিতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে গাড়ি চোরচক্রের ৮ সদস্য আটক

অভিযান অব্যাহত থাকবে, সিন্ডিকেট নির্মূল করা হবে : ওসি

প্রকাশ:  ২৭ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

শাহরাস্তি থানা পুলিশের অভিনব কায়দায় সাঁড়াশি অভিযানে গাড়ি চোর চক্রের ৮ সদস্য আটক হয়েছে। এদেরকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। এ অভিনব কায়দার পরিকল্পনাকাররী হচ্ছেন শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আঃ মান্নান।


বেশ ক'বছর ধরে শাহরাস্তিসহ জেলার বিভিন্নস্থানে বেড়ে চলেছে গাড়ি চুরির ঘটনা। শাহরাস্তি উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন গাড়ি চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে আসছে। অনেক সময় নিজের ব্যবহৃত গাড়ি হারিয়েও পুলিশের নিকট কেউ কেউ অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকেন। এছাড়া গাড়ির কাগজপত্র সঠিক না থাকার কারণেও কেউ কেউ অভিযোগ করতে সাহস পাননি। আবার অনেকেই গাড়ি হারিয়ে বাড়তি ঝামেলা এড়াতে থানায় অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকেন। এই সুযোগে গাড়ি চোরচক্র দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। চোরের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেক সময় দেখা যায় গাড়ির মালিক তাদের ব্যবহৃত গাড়িতে বাড়তি তালা ঝুলিয়ে রাখেন। রাস্তার পাশে গাড়ি রেখে মালিকদের প্রয়োজনীয় কাজ করার সময় বার বার গাড়ি পাহারা দিতেও দেখা যায়। ইতিমধ্যে শাহরাস্তি উপজেলায় বেশ ক'টি মোটরসাইকেল ও সিএনজি স্কুটার চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে। নিজেদের উদ্যোগে গাড়ি উদ্ধার করতে গিয়ে অনেকেই নগদ অর্থও বিসর্জন দিয়েছেন। লজ্জায় এ কথা কাউকে বলারও সাহস পাননি অনেকেই।

 


গত ৭ ডিসেম্বর রাতে শাহরাস্তি উপজেলার আয়নাতলী এলাকা থেকে চালক নূরুল আলিমের সিএনজি স্কুটারটি তার বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায়। নূরুল আমিন হাড়িয়া গ্রামের তাফাজ্জলের ছেলে কামরুল হাসানের সিএনজি স্কুটারটি ভাড়ায় চালিয়ে দিনযাপন করতো। নূরুল আলিম তার গাড়িটি চুরি হওয়ার পর বিষয়টি গাড়ির মালিককে অবহিত করেন। গাড়ির মালিক কামরুল হাসান শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নানকে জানালে তিনি একটি অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন। সেই আলোকে কামরুল হাসান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে থানা পুলিশ চোর চক্রটিকে ধরতে মরিয়া হয়ে উঠে। এক্ষেত্রে পুলিশ চালক নূরুল আলিমকে কাজে লাগায়। তার মাধ্যমে শাহরাস্তি উপজেলার গাড়ি চোর চক্রের সন্দেহজনক সদস্য নবাবপুর গ্রামের দিলদার হোসেন ও সাহাদাত হোসেনকে গাড়ি উদ্ধার করে দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। দিলদার ও সাহাদাত গাড়ি উদ্ধার করে দিবে বলে চালক নূরুল আলিমকে জানান। সে জন্যে তাকে ৪৫ হাজার টাকা দিতে হবে। পুলিশের পরামর্শক্রমে তাদেরকে ৪৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। তার চুরি হওয়া সিএনজি স্কুটারটি কচুয়া উপজেলায় রয়েছে বলে দিলদার ও সাহাদাত জানায়। সে আলোকে নুরুল আলিম গাড়িটি আনতে কচুয়া উপজেলার কাদলা গ্রামে যায়। নূরুল আলিমের পিছনে গোপনে লক্ষ্য রাখে শাহরাস্তি থানা পুলিশ। সেখানে গিয়ে পুলিশ হাতেনাতে সিএনজি স্কুটারসহ কাদলা গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে বাবলুকে আটক করে। বাবলু, দিলদার ও সাহাদাতের স্বীকারোক্তি মোতাবেক রাতব্যাপী পুলিশ শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গাড়ি চোরচক্রের ৮ সদস্যকে আটক করে। থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নানের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় অভিযানে অংশ নেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোরশেদুল আলমসহ থানার উপ-পরিদর্শকগণ।

গতকাল ২৫ ডিসেম্বর সকালে শাহরাস্তি থানা পুলিশ আটককৃতদের কোর্টে প্রেরণ করে। চোরচক্রের অপর সদস্যরা হলো : শাহরাস্তি উপজেলার সংহাই গ্রামের আনোয়ার কবিরাজের ছেলে মোঃ আপন, নরিংপুর গ্রামের আবুল কালাম মেম্বারের ছেলে মোঃ জাফর, বসুপাড়া গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে তোফায়েল হোসেন নাহিদ, নরিংপুর গ্রামের সহিদ উল্লাহর ছেলে ফরহাদ হোসেন, সংহাই গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মোঃ ছানাউল্লাহ প্রকাশ আবুল কালাম।


এ বিষয়ে শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, গাড়ি চোরচক্রের সকল সদস্যকে আটক করা হবে। শাহরাস্তি থেকে যাতে আর একটিও গাড়ি চুরি না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করা হবে। চোরচক্রের সকল সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হবে, তাদের নির্র্মূল করা হবে।

সর্বাধিক পঠিত