• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

আলোচিত ভুট্টু হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদীকে চাপ প্রয়োগ ছেলেকে হত্যার হুমকি

প্রকাশ:  ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১৬:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা, আলোচিত আজিজুর রহমান খান ভুট্টু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশীটে অভিযুক্ত দু আসামী পুলিশ সুপার বরাবরে মিথ্যা অভিযোগ দেয় এবং মামলা তুলে নিতে বাদীকে চাপ প্রয়োগ ও বাদীর ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলা আলোচিত ভুট্টু হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী সুমন খান ও মোস্তফা খান কালু সমপ্রতি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুর রহমান পিপিএম (বার) বরাবরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই রাশেদুজ্জমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে কুৎসা রটিয়ে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেন মামলার বাদী নীলিমা আক্তার লিমা।

 


এদিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চার্জশীটে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশীট প্রদান করেন বলে পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ দেন আসামী সুমন খান ও মোস্তফা খান।

 


অপরদিকে ঘটনার ৫ মাস পর তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই রাশেদুজ্জামান ব্যাপক তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আলোচিত এ মামলার এজাহারভুক্ত ৫ জনসহ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নিয়ে উক্ত মামলার চার্জশীটে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

 


তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাশেদুজ্জামানের আদালতে দেয়া চার্জশীটের বিবরণে মামলার বাদী ও এলাকাবাসী খুশি হওয়ার খবর জানিয়েছেন অনেকে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, ঘটনার প্রকৃত বিবরণই চার্জশীটে উল্লেখিত হয়েছে।

 


অপরদিকে পূর্ব থেকেই অভিযোগ ছিলো, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করার জন্যে বিভিন্ন তদবির ও চেষ্টা চালাচ্ছিল অভিযোগকারী দু আসামী। তাই এলাকাবাসীর অভিযোগ, তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে না পেরে উল্লেখিত দু আসামী এখন তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে মিথ্যা প্রচারণা করে মামলাটি ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে।

 


এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সমপ্রতি এ ধরনের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 


মামলার বাদী নীলিমা আক্তার লিমা জানান, আদালতে উপস্থাপিত চার্জশীটে তারা সন্তুষ্ট। তিনি আভযোগ করে বলেন, আসামীপক্ষ তাদেরকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে বাদীর একমাত্র ছেলেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। বাদী অভিযোগ করে বলেন, জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশে বিষয়টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে।

 


এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রাশেদুজ্জমান জানান, মামলাটির তদন্তভার নিয়ে দীর্ঘ ৫ মাস ব্যাপক তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলার আসামীদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির আলোকে এবং দায়েরকৃত মামলায় এজাহারভুক্ত ৫ জনসহ মোট ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করি। আসামী সুমন খান ও মোস্তফা খান কালু এজাহার নামীয় আসামী। বাদী নিজে তাদের নাম এজাহারে দিয়েছে। এখন যা করার আদালত করবে। মামলার তদন্ত নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। আইন মোতাবেক তদন্ত করেছি। এ সকল মামলার ক্ষেত্রে আসামীপক্ষ সবসময় তদন্তকারী কর্মকর্তার ব্যাপারে অসন্তুষ্ট থাকে।

 


উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ মে দিবাগত রাতে কুমারডুগী নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে আজিজুর রহমান ভুট্টোকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আসামীরা। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন ১৯ মে ভুট্টোর স্ত্রী নীলিমা আক্তার লীমা চাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর ২ জুন মঙ্গলবার বিকেলে মামলার আসামী সোহাগ খানকে শহরের চেয়ারম্যানঘাট এলাকা থেকে আটক করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাশেদুজ্জামান


অন্যদিকে এই মামলায় এজাহার নামীয় আসামীদের মধ্যে মোঃ মুনসুর খান, মোস্তফা খান কালু ও মোঃ সুমন খানকে গত ২০ মে ভোরে চাঁদপুর মডেল থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। পরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। মামলা নং-১৬/২০ এবং ভার্চুয়াল মামলা নং-২৬৮/২০। এরপর মঙ্গলবার (২ জুন) তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।