• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

মেঘনায় একই রাতে ২ লঞ্চে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

প্রকাশ:  ২১ নভেম্বর ২০২০, ১২:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মেঘনায় একই রাতে দু'টি যাত্রীবাহী লঞ্চে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা একটি লঞ্চের শতাধিক যাত্রীর সর্বস্ব এবং অন্য লঞ্চের যাত্রীদের কাছ থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটায় এমভি বন্ধন-৮ এবং একই রাতে পৌনে এগারোটায় এমভি মকবুল-২ লঞ্চে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।


আমাদের মতলব উত্তর ব্যুরো থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ থেকে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে মতলবের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এমভি মকবুল-২ লঞ্চে রাত আনুমানিক পৌনে ১১টায় ডাকাতি হয়। ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে লঞ্চের দেড় শতাধিক যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয় বলে জানান লঞ্চের যাত্রী মতলব উত্তর উপজেলার আনন্দবাজারের মোবাইল ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সুমন।

জানা যায়, লঞ্চটি নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ মিনিট পরে গজারিয়া ঘাটে ভিড়ে। গজারিয়া ঘাটে ভিড়ার ১০ মিনিট পূর্বে স্পিডবোটে করে একজন লোক লঞ্চে উঠে। গজারিয়া ঘাট ছাড়ার বেশ কিছুক্ষণ পরেই ২টি স্পিডবোটে করে ১০/১২ জন ডাকাত লঞ্চে উঠে ফাঁকা গুলি ছুড়ে যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে যাত্রীদের মোবাইল, নগদ টাকা, মহিলাদের স্বর্ণালঙ্কার, যাত্রীদের সাথে থাকা মালামালসহ সর্বস্ব লুটে নেয়। এভাবে ৩০ মিনিটের অধিক সময় ডাকাতি হয়। শেষের দিকে এসে যাত্রীরা চিৎকার করলে অনেক ফাঁকা গুলি ছোড়ে ডাকাতরা। ষাটনল ঘাটে আসার খানিক আগেই ডাকাত দল লঞ্চ থেকে নেমে স্পিডবোটে করে চলে যায়।

বৃহস্পতিবার রাতের এ লঞ্চে চাকুরিজীবীরা বেশি যাতায়াত করে বলে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল বলে জানান লঞ্চের সুকানি সবুজ মিয়া। লঞ্চের নিচতলায়, ক্যাবিনে, বাহডরে এমনকি ছাদের উপরেও আজ অনেক যাত্রী ছিলো। লঞ্চটি নারায়ণগঞ্জ ঘাট থেকে প্রতিদিন রাত ৯টা ১৫ মিনিটে গজারিয়া, ষাটনল, মোহনপুর, এখলাছপুর, আমিরাবাদ লঞ্চঘাট হয়ে মতলবে আসে। মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ হোসেন জানায়, ডাকাত দলকে ধরতে অভিযান চলছে।

অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার মেঘনা নদীতে বরযাত্রীবাহী লঞ্চে প্রথমে ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতরা এ সময় ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে লঞ্চের মালিকসহ ৬ জনকে আটক করেছে গজারিয়া থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলো : লঞ্চের মালিক আঃ সালাম শেখ, স্টাফ নূরুল হক (৪০), মাস্টার মোঃ সাহেদ আলী (৪৪), কেরানী আব্দুল হাই (৪৫), আবুল কাশেম ও মনির হোসেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে আটটার দিকে গজারিয়ার মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

বরের বাবা নূরুল আমিন জানান, তার ছেলে মোঃ রিপনের বিয়ে উপলক্ষে এমভি বন্ধন-৮ নামে একটি লঞ্চ ভাড়া করে পুরাণ ঢাকার মিলব্রাকের উদ্দেশ্যে সকালে গজারিয়ার হোগলাকান্দি ছেড়ে যায়। ভাড়া করা লঞ্চযোগে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে ফেরার পথে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গজারিয়া লঞ্চঘাটের কাছে কিছু যাত্রী নামিয়ে দিয়ে লঞ্চটি আবার হোগলাকান্দির উদ্দেশ্যে রওনা করে। কিছু দূর যাবার পর রাত পৌনে আটটার দিকে ষোলআনি এলাকায় পেঁৗছলে ১৫/২০ জনের ডাকাত দল ট্রলারযোগে লঞ্চের গতিরোধ করে। এ সময় ডাকাতদল লঞ্চের যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বরযাত্রীদের মালামাল লুটে নেয়। তারা দেড় লক্ষাধিক নগদ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও প্রায় ৪০টি মোবাবইল সেটসহ ৭/৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় ডাকাতরা বরযাত্রীদের সাত-আটজনকে কুপিয়ে আহত করে। এছাড়া ডাকাতের হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ৩০ জন।

এ প্রসঙ্গে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেদায়াতুল ইসলাম ভঁূঞা জানান, বরের বাবা নূরুল আমিন বাদী হয়ে গজারিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ডাকাতির ঘটনায় লঞ্চ মালিকসহ ৬ জনকে সন্দেহজনক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

সর্বাধিক পঠিত