• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

পদ্মা-মেঘনায় চলছে মা ইলিশ নিধন

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০২০, ০৮:৪৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদপুরের মেঘনা ও পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়ে গেছে মা ইলিশ নিধন কার্যক্রম। পাশাপাশি কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ এবং টাস্কফোর্সের নদীতে টহল অব্যাহত রয়েছে। হাইমচর ও মতলব উত্তর থেকে আটক ১০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া আলু বাজার নৌ ফাঁড়ি পুলিশ মাছ ধরা অবস্থায় চার জেলেকে আটক করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় সোপর্দ করেছে।

জেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের আওতায় শুক্রবার তৃতীয় দিন পর্যন্ত ২৩টি অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জানা যায়, পদ্মা ও মেঘনায় চাঁদপুর অঞ্চলের চার দিক থেকেই প্রতিদিন জেলেরা মাছ ধরার জন্য নদীতে নামছে। বিশেষ করে জোয়ারের সময় জেলেরা নামছে বেশি।

এদিকে বিভিন্ন ইউনিয়নে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলাকালীন সময়ের জন্যে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত জেলে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। নিবন্ধিত জেলে জনপ্রতি ২০ কেজি করে চাল পাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক ইউনিয়নে সেই চাল বিতরণ করা হয়েছে।

সচেতন মহলের মতে, তারা সরকারি বরাদ্দের চাল নিচ্ছে এবং চুরি করে নদীতে ইলিশ নিধনও করছে। এই অপতৎপরতায় ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন তারা।

পদ্মা ও মেঘনায় নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে শুক্রবার ভোর থেকে জেলার মতলব উত্তরের ষাটনল হতে দক্ষিণে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ সময় জেলার মতলব উত্তরে ৮জন এবং হাইমচর থেকে ২ জেলেকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদ-ে দ-িত করা হয়। এদের মধ্যে হাইমচরে দুই জেলেকে দুই বছর, মতলব উত্তরে সাত জেলেকে এক মাস জেল এবং একজনকে নগদ ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রায় দুই লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়। পরে এসব জাল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। মতলব দক্ষিণ উপজেলার ধনাগোদা নদীতে এক অভিযানে ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হকের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।

এদিকে হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিগান চাকমার নেতৃত্বে উপজেলার টাস্কফোর্স।

১৫ ( অক্টোবর) বৃহস্পতিবার রাতের অভিযানে ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও দুই জেলে আটক করা হয় এবং ৩ কেজির মত মা ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়েছে।

অপরদিকে চাঁদপুর আলু বাজার নৌ ফাঁড়ি পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ইবাহিমপুর ইউনিয়নের আলুর বাজার এলাকায় মা ইলিশ নিধনের সময় চার জেলেকে আটক করে। আটককৃতরা হলো : শরীয়তপুর জেলার সখিপুরের সিরাজ মিজির ছেলে মোঃ কালু মিজি (২১), একই জেলার জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে মোঃ রাবি্ব শেখ (২০), আলী হোসেন বাবুর্চীর ছেলে মোঃ জাফর ইসলাম (২০) ও ফারুক মিয়ার ছেলে মোঃ শাহাদাত (১৯)।

আলু বাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মোঃ পারভেজ জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মা ইলিশ নিধনের সময় ৪ জেলেকে আটক করা হয়। এ সময় ৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, ১৫ কেজি ইলিশ মাছ ও ১ টি কাঠের নৌকা জব্দ করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকী জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণে পালাক্রমে ১০টি দল দিন-রাত নদীতে দায়িত্ব পালন করছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুরসহ দেশের উপকূলীয় ১৯টি জেলার নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। শুধু তা-ই নয়, এ সময় ইলিশ বিক্রয়, পরিবহন ও মজুদও নিষিদ্ধ থাকবে।