• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

করোনাকালে মনতলা উবির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশ:  ১৭ আগস্ট ২০২০, ১৪:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে গত মার্চ মাস থেকে শ্রেণি শিক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ফরিদগঞ্জ উপজেলার মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে উল্টোটা ঘটেছে। পরীক্ষার প্রশ্ন, ফি বাবদ, জাতীয় শোক দিবসের খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচের কথা বলে শিক্ষার্থী প্রতি ২৫০-৩০০ টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। আর সেই টাকা দিতে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে বিদ্যালয়ে জড়ো হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই তুলকালাম কা- ঘটিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুনুর  রশিদ নিজেই।
ঘটনার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন রশিদ জানান, করোনাকালীন আমরা প্রায় শিক্ষার্থীর ফোনে পড়ালেখার খোঁজখবর নিয়েছি। তার একটা খরচ, প্রশ্ন ও কাগজের খরচ, ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের খরচ, শিক্ষকদের খরচ সব মিলিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সাথে সিদ্ধান্তক্রমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ টাকা উত্তোলন করেছি।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, যা অদ্যাবধি বিদ্যমান। কিন্তু ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের মনতলা হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন-অর-রশীদ সরকারের এই নিয়মকে তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার প্রশ্ন, কাগজ, জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২৫০ টাকা এবং ৯ম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০০ টাকা ধার্য করে। সেই হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে নিজেরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে টাকা প্রদান পূর্বক প্রশ্নপত্র ও খাতা নিয়ে গেছে।  
বৃহস্পতিবার দিন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ভিড় জমাচ্ছে। নির্ধারিত ফি প্রদান করে একের পর এক শিক্ষার্থী হাতে পরীক্ষার প্রশ্ন ও কাগজ নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। এ সময় নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার, দশম শ্রেণীর ফাতেমা ও জান্নাত এবং ৮ম, ৭ম শ্রেণির হাবিব, ফয়সালসহ প্রায় ১৫/২০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছ থেকে ২৫০-৩০০ টাকা করে রেখে সব বিষয়ের প্রশ্ন হাতে দিয়ে বলেছেন বাড়িতে পরীক্ষা দিতে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ প্রধান শিক্ষকের এমন  সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানেন না বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আল আমিন পাটোয়ারী ও সদস্য ফয়েজ আহমেদ জানান, এমন বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধান শিক্ষক নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কাজ করছেন।
এ ধরনের কোনো নির্দেশনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্ আলী রেজা আশ্রাফী বলেন, বর্তমান করোনা ভাইরাস জনিত মহামারীতে সরকার বিদ্যালয় বন্ধ রেখেছে। এ সময় পরীক্ষার ফি বাবদ কোনো অর্থ উত্তোলন করা অবৈধ ও বেআইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ফরিদগঞ্জের সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, আমি যেখানে অনিয়মের কথা শুনবো তার সাথে কোনো আপস নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বলবো।