• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরাতে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ:  ১১ জুলাই ২০১৮, ২৩:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি। খুনি নুর চৌধুরীর বিষয়ে ইতোমধ্যে কানাডার ফেডারেল কোর্টে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার পর দায়ীদের বিচার প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। দীর্ঘ একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব প্রাপ্তির পর ওই কালো আইন বাতিল করা হয় এবং খুনিদের বিচারের সম্মুখীন করা হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর ১২জন আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে ৫ আসামির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। 

 

আসামি আবদুল আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মৃত্যুবরণ করেন। বাকি ৬ আসামি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে পালিয়ে আছে। এদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অপর পলাতক আসামিদের মধ্যে খন্দকার আবদুর রশিদ পাকিস্তানে, শরিফুল হক ডালিম লিবিয়া অথবা জিম্বাবুয়ে এবং আবুল মাজেদ সেনেগালে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হয়। রিসালদার (অব.) মোসলেহ উদ্দিন জার্মানিতে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হলেও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। পলাতক এসব খুনিদের অবস্থান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কূটনৈতিকসহ সকল তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফিরিয়ে আনতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে আমরা জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। যেমন কানাডাসহ বেশ কিছু পশ্চিমা দেশ মৃত্যুদন্ড বিলোপ করেছে। বিশেষত কানাডার আইনে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যাবসনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ কারণেই কানাডার ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক নূর চৌধুরীর রিফিউজি স্ট্যাটাস আবেদন প্রত্যাখ্যান এবং তার বিরুদ্ধে ডিপোর্টেশন আদেশ জারি হওয়া সত্ত্বেও কানাডা সরকার নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করছে। জটিলতা সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আমরা কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

 

ন্যাপের আমিনা অহমেদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, মানবিক সহায়তা এবং রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত জঘন্যতম অপরাধের দায় নিরূপণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ নিজ নিজ অবস্থান হতে আইনের আওতায় কাজ করছে। গত ৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে মিয়ানমার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে জোরপূর্বক বিতাড়িতকরণ ইস্যুতে স্বতঃপ্রণোদিত একটি আইনি প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। মন্ত্রী জানান, এসব উদ্যোগের পাশাপাশি আমরা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবসনে জতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার এবং ইউএনডিপির সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এ সমঝোতা স্মারকের বাস্তবায়ন হলে রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসই প্রত্যাবাসনে সহায়ক হবে।