• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী

শহরের ছোঁয়া গ্রামে দিয়ে মানুষকে গ্রামমুখী করার ইচ্ছে নিয়েই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম হাঁসা গ্রামের হালিম পাটওয়ারী বাড়ির বাবা, নানাসহ একই পরিবারের ১৬জন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের গর্বিত সদস্য আলহাজ¦ হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী। রাজনৈতিকভাবে আদর্শবান পরিবারের সদস্য ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে একজন সফল ব্যবসায়ী। শতভাগ আওয়ামী পরিবারের এই সদস্য আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এবার একনজরে জেনে নেয়া যাক চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীর আদ্যোপান্ত। হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীর নানা মরহুম ফয়েজ বক্স পাটোয়ারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চাঁদপুর মহকুমা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের সময় রেসকোর্স ময়দানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। ভাষণ শুনে চাঁদপুরে ফিরে এসে এলাকার যুবকদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য সংগঠিত করেন। পরে  ৫০/৬০ জনের একটি দল নিয়ে ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য যান। প্রশিক্ষণ শেষে তারা দেশে ফিরে এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
এছাড়া মরহুম ফয়েজ বক্স পাটোয়ারী টানা ৩৫ বছর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরমধ্যে প্রথমে সংযুক্ত গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট টানা ৩ বার ও পরে গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের টানা দুইবার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব শুরু করে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।
দাদা আব্দুল মজিদ পাটওয়ারী মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের পুরো ৯মাস মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, অর্থ ও চলাচলের জন্যে নৌকা দিয়ে একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।
হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া পাটোয়ারী ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি ১৯৮৩ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেন। বর্তমানে তিনি গোবিন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। এছাড়া মাওলানা ইদ্রিস মিয়া পাটোয়ারী দীর্ঘদিন মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, ফরিদগঞ্জের সহ-সভাপতির দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেন।
হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীর চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন নান্নু পাটওয়ারী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অন্যতম কমান্ডার ছিলেন। দেলোয়ার হোসেন নান্নু পাটওয়ারীর ছেলে ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীর চাচাতো ভাই সাবেক ছাত্রনেতা জিয়াউদ্দিন সোহাগ পাটওয়ারী বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হিসেবে দলের জন্য কাজ করছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীসহ পুরো পরিবারের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার ও নির্যাতন। একই ঘটনা ঘটে ২০০১ সালের জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর।
চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতি করেছেন। ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের শিক্ষা ও মানবকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি বর্তমানে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখার সাথে সাথে তিনি এলাকার মানুষের জন্য দীর্ঘকাল ধরে নীরবে কাজ করে চলেছেন। অবশেষে এলাকার মানুষের প্রত্যাশাকে পূরণ করতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন।
‘দলীয় মনোনয়ন কেন চাচ্ছেন’ এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে আমাদের পরিবার সারাজীবন এই এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বগুণের কারণে আজ তৃণমূলে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু আমার ইউনিয়ন তথা গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন গত দেড়দশকে এই ছোঁয়া থেকে অনেকখানি বঞ্চিত। অথচ এই ইউনিয়নটি পার্শ^বর্তী হাইমচর, চাঁদপুর সদর এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্যস্থল হওয়ায় ব্যবসা বাণিজ্যের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিরা সেভাবে এলাকাটিকে তুলে ধরতে পারেন নি। তাই আমি পারিবারিক ঐতিহ্যের খাতিরে এলাকার উন্নয়নের দিক বিবেচনা করে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।
‘আপনার পরিকল্পনা কী’ এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রাম হবে শহর’ এই শ্লোগানকে বাস্তবায়ন করাই হবে আমার লক্ষ্য। অত্র ইউনিয়নের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নে পুরুষানুক্রমে আমরা নিবেদিত। এলাকার উন্নয়ন হলে মানুষ আর শহরমুখী হবে না। তাই শহরের ছোঁয়া গ্রামে দিয়ে মানুষকে গ্রামমুখী করার প্রত্যাশা নিয়েই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।
‘আপনাকে দলীয় মনোনয়ন দিবে এই ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী’ এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন প্রকৃত আওয়ামী লীগারদের খুঁজছেন। আপনি বেশি দূরে নয়, ফরিদগঞ্জ পৌরসভাসহ সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে দলের মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা দেখুন। আপনার প্রশ্নের উত্তর মিলবে। আমার বাবা ও নানার পরিবারের সকলেই এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ^াসী। এক ঘরে কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ বিএনপি এই জাতীয় কোনো কিছুই আমার পরিবারে নেই। সবচেয়ে বড় কথা, আমার পরিবারের ১৬জন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাই ডিজিটাল ইউনিয়ন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে নতুন প্রজন্মের ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সিঁড়ি পেরিয়ে নিজের ও পরিবারের ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে আসছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে শেখ হাসিনার মনোনীত হতে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। আজ সময়ের দাবি হিসেবে সামনে এসেছে ‘আর নয় পিছিয়ে এবার যাবো সামনে’ এই শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাবো।
উল্লেখ্য, হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী করোনা মহামারিতে সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোাগে পুরো ইউনিয়নে ত্রাণ সমগ্রী, ঈদ উপহার নি¤œ আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। ইউনিয়নের দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাহিদা মাফিক উন্নয়ন সহায়তা ও কম্পিউটার প্রদান অব্যাহত রেখেছেন।

 

সর্বাধিক পঠিত